গরমে পালং চাষ করে সাড়া ফেলেছেন ফরিদপুরের বাচ্চু

শীতকালের সুস্বাদু পালংশাক গরমকালে চাষ করে সাড়া ফেলেছেন ফরিদপুরের বাচ্চু।

ফরিদপুর প্রতিনিধিমফিজুর রহমান শিপন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2018, 07:51 AM
Updated : 20 Sept 2018, 07:57 AM

সদর উপজেলার বিলমামুদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, উঁচু জমিতে পলিথিনের চালের নিচে বাচ্চু মোল্লা তার লোকজন নিয়ে তরতাজা সবুজ শাক পরিচর্যা করছেন।

বাচ্চু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সবজির বাজারে বৈচিত্র্য আনতে তার এই উদ্যোগ।

“এটি একটি জনপ্রিয় শাক। গরমকালে যেহেতু পালংশাক বাজারে পাওয়া যায় না, তাই এ সময় মানুষ এর প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখাবে বলে মনে করেছি।”

তার ইচ্ছা-পরিকল্পনা কাজে লেগেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে এক কেজি পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।  যেখানে শীতকালে বিক্রি হয় ১০ থেকে ১৫ টাকায়।”

গরমকালে পালং চাষের খবর পেয়ে অনেকে দেখতে যাচ্ছেন। এখন থেকেই পরের বছর গরমকালে পালং চাষের কথা ভাবছেন অনেক চাষি।

বিলমামুদপুর গ্রামের কৃষক জুয়েল মল্লিক বলেন, “আমরা শীতকালে পালং চাষ করি। সবাই তাই করে। এ কারণে তা ১০-১৫ টাকায় বেচতে হয়।

“বাচ্চু গরমে পালং চাষ করে এক কেজি শাক বিক্রি করছেন ১০০ থেকে ১২০ টাকায়! বাজারে এখন পালং শাকের চাহিদা খুব বেশি। আমিও আগামীতে গরমে পালং চাষ করব।”

গরমে পালং চাষ করার জন্য বাচ্চুকে বেছে নিতে হয়েছে উঁচু জায়গা; যাতে বৃষ্টি হলে পানি না জমে। তাছাড়া বেশি বৃষ্টিতে শাক পচে যাওয়া থেকে রক্ষার জন্য বানাতে হয়েছে পলিথিনের শেড।

বাচ্চু বলেন, “ঘর তৈরি থেকে শুরু করে মোট খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। উৎপাদিত শাক ৮০-৯০ হাজার টাকায় বেচতে পারব বলে আশা করছি।”

বাচ্চু তার শাকে রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করেননি দাবি করে বলেন, “আমি এখানে শুধু জৈবসার করেছি।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল বাসার মিয়া বাচ্চুর সম্পর্কে বলেন, “বাচ্চু একজন আদর্শ কৃষক। তিনি সব সময় কৃষিতে নতুনত্ব যোগ করেন। পাঁচ বছর ধরে গ্রীষ্মকালী টমেটো চাষ করে ফরিদপুর জেলায় সাড়া ফেলেছিলেন।

“এখন গরমকালে পালং চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। বাজারে চাহিদা থাকায় ভাল টাকা আয় করছেন। আমরাও বাচ্চুকে সার-বীজ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি।”

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, “বাচ্চু নিজ উদ্যোগে পালং উৎপাদন করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। নিরাপদ সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে চাষিদের আমরা প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। ”

চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে ফরিদপুরে প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ হয়েছে বলে তিনি জানান।