পুলিশ বলছে, পাঁচ মামলার আসামি পুতু সরকারকে (৪৫) তারা অনেক দিন ধরেই খুঁজছিল। স্থানীয় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় তাকে তালিকাভুক্ত করেছিল ‘মাদকের গডফাদার’ হিসেবে।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে শহরের ভাটকান্দী ব্রিজের পূর্ব দিকে ‘দুই দল মাদক বিক্রেতার’ গোলাগুলির পর সেখান থেকে পুতু সরকারের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞার ভাষ্য।
বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে পুতুর ভাই মতিন সরকার জেলা ট্রাকমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাদের আরেক ভাই তুফান সরকার ছিলেন শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক।
বছর খানেক আগে এক কিশোরীকে বাড়িকে থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের পর তাকে ও তার মাকে পিটিয়ে মাথা ন্যাড়া করার ঘটনায় মতিন ও তুফান আলোচিত হন।
সে সময় তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ওই মামলায় দুই ভাই কারাগারে গেলেও মতিন পরে জামিনে মুক্তি পান। তুফান এখনও কারাগারে আছেন বলে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান।
সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান বলেন, ভাটকান্দি সেতুর কাছে ‘দুই দল দুষ্কৃতকারীর’ সংঘর্ষের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে পুলিশ সেখানে যায়।
“কাছে যেতেই তারা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়লে তারা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।”
তাকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ানশুটার গান, একটি পাইপগান, আটটি গুলি ও ৫০০ ইয়াবা উদ্ধার করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “যেহেতু ঘটনাস্থলে মাদক পাওয়া গেছে, তাই ধারণা করা হচ্ছে যারা গোলাগুলিতে লিপ্ত ছিল তারা মাদক ব্যবসায়ী।”
পুলিশ সুপার বলেন, পুতুর বিরুদ্ধে বগুড়া সদর ও শিবগঞ্জ থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। এ কারণে পুলিশ তাকে খুঁজছিল, কিন্তু সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকেই পুতু আত্মগোপনে ছিলেন।
তিনি বলেন, “মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান চলছে। নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত চলবে; কাউকে ছাড়া হবে না।”