জনতার মুখোমুখি গাজীপুরের ৭ মেয়র প্রার্থী

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাত মেয়র পদপ্রার্থী জনতার মুখোমুখি হয়ে তাদের নানা প্রশ্নে জবাব দিয়েছেন।

সোমবার জেলা শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এই আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে লটারির মাধ্যমে প্রার্থীদের বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া উন্মুক্তভাবে নাগরিকদের নানা প্রশ্ন করার সুযোগ দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর সিটিকে আধুনিকভাবে গড়ে তুলতে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করেছেন বরে জানান।

কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে রাস্তা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করে গাজীপুরকে আধুনিক শহরে পরিণত করার কথা বলেন তিনি।

এছাড়া ৫টি অর্থনৈতিক জোন, ৮টি শ্রমিক আবাসন গড়াসহ সকল পেশা ও বর্ণের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুত দেন তিনি।

যানজট মুক্ত করতে ঢাকার এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর পর্যন্ত ডবল লাইনের রেলপথ স্থাপনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাইপাস সড়ক স্থাপনে উদ্যোগ নেবেন বলেও প্রতিশ্রুত দেন।

বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার নির্বাচিত হলে নাগরিকদের কল্যাণমূলক কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাগরিকদের সমস্যা চিহ্নিত করে তাদের আশা-আকাঙ্খা পূরণের চেষ্টা করবেন বলে জানান।

পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকারের কাজে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ থাকে। এতে অনেকের সদিচ্ছা থাকলেও স্বাধীনভাবে কাজ করা যায় না। বর্তমান মেয়র এমএ মান্নানেরও ওই সমস্যা হয়েছে।”

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী কাজী মো. রুহুল আমীন মানুষে-মানুষে বৈষম্য দূর করে সিটিকে যানজট মুক্ত, বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরের ইচ্ছার কথা বলেন।  

বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট প্রার্থী মো. জালাল উদ্দিন নগরীতে শিশুপার্ক ও প্রবীণ নিবাস স্থাপন, কলকালখানায় নারী শ্রমিকদের শিশুদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের কথা বলেন।

মেয়র হলে অগ্রাধিকারভিত্তিতে মাদক নির্মূল করবেন বলেও জানান।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন নাগরিকের খাদেম হিসেবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ নির্বাচিত হলে সিটির প্রতি ওয়ার্ডে বেকারদের কর্মর্সস্থানের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।

এছাড়া প্রতি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের ব্যবস্থা এবং সাংবাদিকদের জন্য একটি ডিজিটাল প্রেস ইনস্টিটিউট ভবনও করারও প্রতিশ্রুতি দেন।  

শুরুতে বক্তব্য দেন ইসলামী ঐক্যজোট প্রার্থী ফজলুর রহমান। তিনি মেয়রের দায়িত্ব পেলে সিটিকে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত করার আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে প্রার্থীদের সঙ্গে নাগরিকদের উন্মুক্ত প্রশ্ন ও উত্তরের আয়োজন করা হয়।  

অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী নাগরিক নূর মোহাম্মদ নির্বাচিত মেয়র তাদের মতো অসহায়দের জন্য কী করবেন জানতে চান।

আলী হাওলাদার বলেন, তার এলাকা গাজীপুর ক্যান্টনমেন্টের কাছে থাকায় সিটির কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।

প্রার্থীরা নির্বাচনে বিজয়ী হলে এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেবেন জানতে চান তিনি।

অনুষ্ঠানে শুরুতে প্রার্থী ও নাগরিকসহ উপস্থিত সকলেই জাতীয় সঙ্গীতে অংশ নেন। পরে সুজনের দেওয়া অঙ্গীকারনামায় প্রার্থীরা স্বাক্ষর করেন।

সুজনের গাজীপুর মহানগর সভাপতি মো. মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মো. বদিউল আলম মজুমদার ও সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দীলিপ কুমার সরকার।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুজনের জেলা সম্পাদক মো. রুহুল আমিন সজীব।