কোটা সংস্কার বিষয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
Published : 11 Apr 2018, 09:27 PM
আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখপাত্র খান মুনতাসির আরমান বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় উপাচার্য, শিক্ষক সমিতি নেতা ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
হামলায় নারী শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৮-১০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি আরমানের।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ‘ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবি তুলেছে।
সারাদেশে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বুধবার সংসদে এ বিষয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে উপাচার্য আমাদের মাঝে এসে বক্তব্য দিয়ে আমাদের রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
“কিন্তু উপাচার্যের কথা শেষ না হতেই হঠাৎ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাঁশ ও লাঠি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে মারতে থাকে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।”
আরমানের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দুজন নারী শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করেছে। এছাড়া সংবাদ সংগ্রহের সময় তিন সাংবাদিককে লাঞ্ছিতও করা হয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ছাত্রলীগ কাউকে হামলা করেনি। তারা নিজেরা নিজেরা মারামারি করেছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধান গেট সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় দুই সহস্ত্রাধিক শিক্ষার্থী। প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে সড়কটি বন্ধ রাখে শিক্ষার্থীরা।
বিকালে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপাচার্য মহাসড়ক থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিতে আসেন। এ সময় উপাচার্যের সাথে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বশির আহমেদ এবং প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা। উপাচার্যের বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে মারতে থাকে একদল যুবক।
এ বিষয়ে প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, “বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছি। তাদের কথা শুনে পরবর্তীতে করণীয় ঠিক করব।”
এদিকে, শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার পরে ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করে ছাত্রলীগ।
অন্যদিকে, হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।