নির্বাচনে বিএনপি জোটে থাকবে জামায়াত: ফখরুল

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে জোটে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2017, 09:51 AM
Updated : 19 Nov 2017, 09:51 AM

লালমনিরহাট যাওয়ার পথে রোববার সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।

আগামী নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোটে জামায়াতের থাকা না থাকা নিয়ে প্রশ্ন করলে ফখরুল বলেন, “আমাদের জোট অটুট রয়েছে। এখনও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়নি। তাই আগামী নির্বাচনে তারা আমাদের সঙ্গে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।”

২০০৮ সালে ৪ নভেম্বর ১৪ নম্বর দল হিসাবে জামায়াত ইসির নিবন্ধন পায় এবং তাদের দাঁড়িপাল্লা প্রতীক দেওয়া হয়।

এরপর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী একই জোটে থেকে নির্বাচন করে।

কিন্তু সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক দলীয় গঠনতন্ত্রের কারণে ২০১৩ সালে উচ্চ আদালতের আদেশে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ হলে দলটি নির্বাচনে অযোগ্য হয়ে পড়ে। নিবন্ধন হারালেও দল হিসেবে এখনও জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হয়নি।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা চালায়। ওই সময় ব্যাপক জ্বালাও পোড়াও চলে দেশব্যাপী।

এ বছরের ১৪ মে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক গোলটেবিল বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে তাদের যে ২০ দলীয় জোট, তা ‘আন্দোলনকেন্দ্রিক’, এর সঙ্গে আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনার কোনো সম্পর্ক নেই।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের আরও বলেন, “সরকার চক্রান্ত করে রংপুরের ঠাকুরপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীরদের নাম জড়িয়ে নিজেদের দোষ ঢাকতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে।”

ফখরুলের আগে দুপুরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘটনাস্থলে গিয়ে ঠাকুরপাড়ার ঘটনার জন্য সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দায়ী করেন।

কয়েকদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এ হামলা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয় বলে মন্তব্য করেছিলেন।

এছাড়া ঘটনার পর রংপুরের এসপি মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নির্বাচনের আগে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য জামায়াত-শিবির এ ঘটনা ঘটিয়েছে।  

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজকে রংপুরের ঠাকুরপাড়ায় আমরও যাওয়ার কথা ছিল; কিন্ত সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ নেতৃবৃন্দ যাচ্ছেন।

“তাই সেখানে একসাথে দুটি দলের প্রোগ্রাম করা সমীচীন নয়, এ বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দেই। তাই আমি  তাদের ছাড় দিয়েছি।”

ফখরুল আরও বলেন, “আজ লালমনিরহাটে আমার গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে। মিটিং শেষ করে আবার ঢাকায় ফিরতে হবে। আগামীকাল আমি রংপুরের ঠাকুরপাড়া গ্রামে পরিদর্শনে আসব।”

সৈয়দপুরে বিমান থেকে নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কয়েক মিনিট কথা বলে মির্জা ফখরুল লালমনিরহাটের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

ঠাকুরপাড়ায় হিন্দু বাড়িঘরে হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং বিএনপি মহাসচিব একই বিমানে সৈয়দপুর এসে সেখান থেকে সড়কপথে রংপুর যাওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু সকাল  সাড়ে ৯টায় ইউএস বাংলা বিমানে সৈয়দপুর আসেন শুধু আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের।

এর ১৫ মিনিট পর নভোএয়ারের একটি বিমানে সৈয়দপুর আসেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল।