ঠাকুরপাড়ার হামলায় অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তি: কাদের

একটি সাম্প্রদায়িক শক্তি রংপুরের ঠাকুরপাড়ায় হিন্দু বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2017, 07:14 AM
Updated : 19 Nov 2017, 07:46 AM

রোববার দুপুরে সদর উপজেলার ঠাকুরপাড়ায় নয় দিন আগে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু বাড়িঘর পরিদর্শনে এসে তিনি একথা বলেন।

ঠাকুরপাড়া গ্রামের খগেন রায়ের ছেলে টিটু রায়ের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ১০ নভেম্বর ঠাকুরপাড়া গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের মিছিল থেকে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়।

আগুনে টিটু রায়ের তিনটি, সুধীর রায়ের ছয়টি, অমূল্য রায়, বিধান রায় ও কৌশল্য রায়ের দুটি করে ছয়টি, কুলীন রায়, ক্ষিরোধ রায় ও দীনেশ রায়ের একটি করে ঘর পুড়ে যায়।  পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন নিহত, আরও ১০ জন আহত হন।

ঘটনাস্থলে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচানকে সামনে রেখে একটি অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তি রংপুরের ঠাকুরপাড়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা করেছে।

“এ ধরনের অপকর্ম যারা করছে তারা দেশকে শুধু অস্থতিশীল করতে চাইছে না, তারা ভারতের সঙ্গে আমাদের বিরাজমান সুসস্পর্ক বিনষ্ট করতে চায়।”

ভারতের সঙ্গে যারা সম্পর্ক বিনষ্ট করতে চায় তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে বলে মনে করেন কাদের।

“ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, কক্সবাজারের রামু এবং রংপুরের এই ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা। একই ষড়যন্ত্রের অংশ।”

কাদের বলেন, ঠাকুরপাড়ার ঘটনায় যারা মঞ্চে ছিল, যারা নেপথ্যে ছিল তারা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন কেউ রেহাই পাবে না। প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা হবে, এটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ।

বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রংপুর সফর পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে তিনি বলেন, “ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ আমার সঙ্গে একই ফ্লাইটে এখানে আসার কথা ছিল বলে আমি জেনেছি।

“ফখরুল সাহেব আমার সঙ্গে এলে চোখাচোখি হতো, মুখোমুখি হতো, ভাব বিনিময় হতো, শুভেচ্ছা বিনিময় হতো। দুজন পাশাপাশি বসে আসতাম। এটাকে আমি পজিটিভভাবে দেখতাম। কিন্ত পরে জানতে পারলাম তিনি পরের ফ্লাইটে এসেছেন।”

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে একই ফ্লাইটে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরেরও আসার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয় তার সফরের সময় একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

বেলা সোয়া ১২টার দিকে সংবাদ ব্রিফিং শেষে ওবায়দুল কাদের ঘর পুড়ে যাওয়া নয় পরিবারের প্রত্যেকটিকে ২৫ হাজার টাকা, ভাংচুর হওয়া সাত পরিবারের প্রত্যেকটিকে ১০ হাজার টাকা এবং মন্দির নির্মাণের জন্য ১০ হাজার টাকা অনুদান দেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ চৌধুরী ও বিএম মোম্মেল হক এবং স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।

পরে পাশে ব্রাহ্মণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে যোগ দেন তিনি।