কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের বৃহত্তম ঈদগাহে ঈদুল আজহার নামাজ পড়েছেন স্থানীয় ও দূরদূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ।
Published : 02 Sep 2017, 12:49 PM
শনিবার সকাল ৯টায় এ জামাতে ইমামতি করেন শামছুদ্দিন ভূঁইয়া জামে মসজিদের খতিব মুফতি হিবজুর রহমান। এটি ছিল এ মাঠে ঈদুল আজহার ১৯০তম জামাত।
নামাজ শেষে মিয়ানমারে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের রক্ষাসহ মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।
প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, জন প্রতিনিধি, রাজনীতিক, পেশাজীবী নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ জামাতে অংশগ্রহণ করেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক আজিমুদ্দিন বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান জানান, উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হাজার হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা ও পুলিশ প্রশাসন জানায়, এবার ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিন প্লাটুন বিজিবিসহ র্যাব, পুলিশ, আনসার বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন করা হয়।
মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে নামাজে আসা লোকদের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয়।
জামাতে অংশগ্রহণ করতে সকাল থেকেই মুসুল্লিদের ঢল নামে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহে। এ সময় কয়েক ঘণ্টার জন্য আশপাশের সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঈদ জামাতে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। এর একটি ট্রেন ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং অপর ট্রেনটি সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে ছেড়ে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে কিশোরগঞ্জ শোলাকিয়া মাঠের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ৬ষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারী প্রতিষ্ঠার পর ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির উপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। সে বছর অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’ মাঠ। উচ্চারণ বিবর্তনে যা এখন শোলাকিয়া মাঠ নামেই পরিচিত।
গত বছরের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন সকালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে আজিমুদ্দিন স্কুলের পাশে পুলিশ সদস্যদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ হামলায় পুলিশের দুই সদস্য, এক জঙ্গি ও পাশের বাড়ির ভিতরে থাকা ঝর্ণা রাণী ভৌমিক নামে এক গৃহবধুসহ চারজন নিহত হয়। আট পুলিশসহ তিন পথচারী গুরুতর আহত হয়।