শৈশবে আগুনে পুড় দুই হাতেরই সব আঙ্গুল নষ্ট হয়ে গেছে, তাই বলে পড়ালেখা হবে না এমনটা মেনে নিতে পারেননি লালমনিরহাটের শাহ আলম। এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন কবজি দিয়ে লিখে।
Published : 04 Apr 2017, 11:57 AM
জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার পূর্ব বিছনদই গ্রামের শাহ আলমের লেখা অন্য অনেকের চেয়ে সুন্দর। রোববার হাতিবান্ধা মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র গিয়ে তাকে কবজি দিয়ে লিখতে দেখা যায়। লেখা দেখে অভিভূত পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষকরা।
শাহ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র তিনি। স্থানীয় একটি ব্র্যাক স্কুলে লেখাপড়া শুরু। এরপর এসএসসি পর্যন্ত সব পরীক্ষায় ভালোভাবে পাস করনে।
“এইচএসসি পরীক্ষাও ভালো হচ্ছে। ফল ভালো হবে আশা করছি। ভবিষ্যতে আমি একজন ভালো শিক্ষক হতে চাই।”
শাহ আলম পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। বাবা একরামুল হক বর্গাচাষী, আর মা মরিয়ম বেগম গৃহিণী।
একরামুল বলেন, মাত্র এক বছর বয়সে দুই হাতের কবজি পর্যন্ত আগুনে পুড়ে যায়। চিকিৎসার ব্যয় বহনের সামর্থ্য না থাকায় আঙ্গুলগুলো হারাতে হয় আলমকে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার অদম্য ইচ্ছা তার।
“শাহ আলম হাত হারালেও মনোবল হারায়নি কখনও। লেখাপড়া করে সে একজন ভালো শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সাত সদস্যের অভাবী পরিবারের চাহিদা মেটাতে গিয়ে ছেলের সেই স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত পূরণ করতে পারব কিনা জানি না।”
শাহ আলমের শিক্ষক হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ সরওয়ার হায়াত খান বলেন, “শাহ আলম মেধাবী ছাত্র। ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে বলে আশা করি।”
উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউজ্জামান ভেলু বলেন, “শাহ আলম প্রতিভাবান ছাত্র। তার দরিদ্র বাবা-মায়ের পক্ষে লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাওয়া খুব কষ্টকর বলে শুনেছি। বিত্তবান কেউ শাহ আলমের পাশে দাঁড়াবে বলে আশা করি।”