পাবনার ঈশ্বরদীতে এক অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের হেলিকপ্টারে করে যাওয়া নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সমালোচনা চলছে।
Published : 14 Jan 2017, 11:55 AM
আওয়ামী লীগ এবং তাদের জোট শরিক দলগুলোর নেতারা বলছেন, ছাত্র সংগঠনটির সভাপতির এই বিলাসিতা সমর্থনযোগ্য নয়।
ঢাকা থেকে শুক্রবার বিকালে পারটেক্স এভিয়েশনের একটি হেলিকপ্টারে করে ঈশ্বরদী যান সোহাগ।
জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল আহাদ বাবু দলের ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতার সমালোচনা করছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্রলীগ বা ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদক হলেই তারা মনে করেন যে দেশের গভর্নর হয়ে গেছেন।
“আমরা যখন ছাত্রলীগ করেছি তখন পাঁচ-দশ টাকা পকেটে নিয়ে সারাদিন পায়ে হেঁটে কাজ করেছি। বর্তমানে ছোটখাটো নেতারাও মাইক্রোবাস নিয়ে চলাফেরা করেন। ছাত্ররাজনীতি বর্তমানে ব্যবসায়ী সংগঠনে পরিণত হয়েছে।”
ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, “আমি ছাত্রলীগের একজন সাবেক কর্মী হিসেবে মনে করি, এই সংস্কৃতি শোভনীয় নয়।
“শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে ছাত্রলীগ নেতার এমন হেলিকপ্টার বিলাসিতা মোটেও কাম্য নয়।”
জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, “ছাত্রলীগ নেতার এই বিলাসিতায় তার আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের খতিয়ে দেখা উচিৎ।”
ছাত্রলীগ সভাপতির হেলিকপ্টারের এই ব্যয়ের উৎসের বিষয়ে সংগঠনটির স্থানীয় নেতাদের কেউ মুখ খোলেননি। সোহাগের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।
শুক্রবার বিকালে ঈশ্বরদীতে ‘জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদক ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী’ শোভাযাত্রা ও কর্মশালা উদ্বোধন করেন তিনি। অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক ছিলেন আব্দুল হামিদ মেডিকেল কলেজের পরিচালক রাসেল আহমেদ তুহিন। তিনি সড়ক পথে এই গিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দেন।
ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ছেলে শফিকুর রহমান কনক ছিলেন এই কর্মসূচির আয়োজক।
কনকের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ভূমিমন্ত্রীর মেয়ে ও জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাহজাবিন শিরিন পিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক।
শনিবার ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের সম্মেলনেও সোহাগের অংশ নেওয়ার কথা।
অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রভাবিত করতে মন্ত্রীপুত্রের উদ্যোগে ওই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
ওই সম্মেলন নিয়ে ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি ‘কিছু জানেন না’ বলে জানিয়েছেন।
পাবনা ছাত্রলীগের সভাপতি রুহুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জেলা ছাত্রলীগের কোনো অনুমতি ছাড়াই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাকে সাংগঠনিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।”