প্রথম দফা ফিরিয়ে দেওয়ার পর অবশেষে সরকারি ত্রাণ নিয়েছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।
Published : 16 Nov 2016, 05:07 PM
ত্রাণ ফিরিয়ে দিয়ে প্রতিবাদ সাঁওতালদের
চিকিৎসাধীন সাঁওতালদের হাতকড়া খোলার নির্দেশ
সাঁওতালদের ওপর হামলার প্রতিবাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানববন্ধন
বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিবাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা তুজ জোহরা সাঁওতাল পল্লী মাদারপুর চার্চ মাঠে এই ত্রাণ বিতরণ করেন।
উচ্ছেদ করা জমিতে পুনর্বাসনের দাবিতে এর আগে সোমবার এ ত্রাণ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল মাদারপুর ও জয়পুর পল্লীর সাঁওতালরা।
ত্রাণ বিরতণের সময় উপস্থিত ছিলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহম্মদ আলী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ত্রাণ) জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, প্রাথমিক তালিকাভুক্ত ১৫০ সাঁওতাল পরিবারের প্রত্যেককে ২০ কেজি চাল, এক লিটার তেল, এক কেজি ডাল, এক কেজি আলু, এক কেজি লবণ ও দুইটি করে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পুনর্বাসন ও ত্রাণ কর্মসূচির আওতায় সোমবার মাদারপুর ও জয়পুর পল্লীর সাঁওতালদের জন্য এই ত্রাণ নিয়ে যান গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নান। তখন তারা ওই ত্রাণ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়ে বলেছিলেন, উচ্ছেদ করা জমিতে পুনর্বাসন না করা পর্যন্ত সরকারি কোনো ত্রাণ গ্রহণ করবে না।
এ ব্যাপারে আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র সরেন বলেন, তাদের একটি প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দাবিগুলো জানিয়েছে। তিনি সম্মানজনক সমাধানের আশ্বাস দেওয়ায় বুধবার ত্রাণ গ্রহণ করা হয়েছে।
সাঁওতালদের জন্য জরুরি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ৬ মেট্রিক টন চাল এবং ৫০ হাজার টাকা, ৩০০ কম্বল বরাদ্দ করা হয়েছে বলে রোববার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ।
গত ৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ও সাঁওতালদের সংঘর্ষ থামাতে গুলি চালায় পুলিশ। এতে তিন সাঁওতাল নিহত হন, আহত হন অনেকে।
পরে পুলিশ-র্যাব ওই দিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এক অভিযান চালিয়ে মিলের জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে।
এ ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক কল্যাণ চক্রবর্তী বাদী হয়ে ওই রাতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ সাড়ে ৩০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলায় এ পর্যন্ত পুলিশ চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
তবে তিন সাঁওতাল হত্যার ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। সেইসেঙ্গে ঘটনা তদন্তে কোনো কমিটিও গঠিত হয়নি।