একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের মামলায় নেত্রকোণার আটপাড়া থেকে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
Published : 02 Oct 2016, 10:13 PM
ওসি জানান, মঞ্জুকে আটপাড়া থানায় রাখা হয়েছে। পরে তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করা হবে।
একই মামলায় আরও দুইজন আসামি হলেন মঞ্জুর বড় ভাই হেদায়েত উল্লাহ ওরফে মো. হেদায়েতুল্লাহ ওরফে আঞ্জু বিএসসি (৮০) এবং সোহরাব ফকির ওরফে সোহরাব আলী ওরফে ছোরাপ আলী (৮৮)।
এদের মধ্যে আঞ্জু পলাতক এবং ছোরাপ কারাগারে আছেন। তাদের সবার বাড়ি আটপাড়ার কুলশ্রীতে।
তাদের তিনজনই একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী রাজাকার সদস্য ছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল ২০১৫ সালের ৫ মে তদন্ত শুরু করে এবং গত ৮ সেপ্টেম্বর এই তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে।
আসামিদের তিনজনই একাত্তরে জামায়াতের কর্মী ছিলেন। এদের মধ্যে আঞ্জু-মঞ্জু এখনও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে প্রসিকিউশনের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রশিদ।
নেত্রকোণার আটপাড়ার মধুয়াখালী গ্রাম, মোবারকপুর গ্রাম, সুখারী গ্রাম এবং মদন উপজেলার মদন গ্রামে সংঘটিত এসব অপরাধের ভিত্তিতে এই তিন আসামির বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ প্রস্তুত করেছে তদন্ত সংস্থা।
প্রাথমিকভাবে এদের বিরুদ্ধে এই ছয় অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। ওইদিনই সোহরাব ফকির গ্রেপ্তার হয়।
আঞ্জু-মঞ্জু-ছোরাপের বিরুদ্ধে ৬ অভিযোগ
অভিযোগ ১: ১৯৭১ সালের ২৯ মে বেলা ১০/১১টার দিকে নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার মধুয়াখালী গ্রামে ২০-৩০টি ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ;
অভিযোগ ২: ১৯৭১ সালের ২৩ অগাস্ট বেলা ১১টা থেকে আটপাড়ার মোবারকপুর গ্রামের শহীদ মালেক তালকুদার ও কালা চান মুন্সিকে অপহরণ, হত্যা এবং লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ;
অভিযোগ ৩: ১৯৭১ সালের ৩০ অগাস্ট বেলা অনুমানিক ১২টা হতে বিকাল পর্যন্ত নেত্রকোনার মদন উপজেলার মদন গ্রামের শহীদ হেলিম তালুকদারকে অপহরণ ও হত্যা এবং লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ;
অভিযোগ ৪: ১৯৭১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বেলা ১টা হতে রাত পর্যন্ত নেত্রকোণার আটপাড়ার সুখারী গ্রামের শহীদ দীনেশ চন্দ্র, শৈলেশ চন্দ্র, প্রফুল্ল বালা, মনোরঞ্জণ বিশ্বাস, দুর্গা শংকর ভট্টাচার্য, পলু দে, তারেশ চন্দ্র সরকারকে অপহরণ, গণহত্যা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ;
অভিযোগ ৫: ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাত্রি বেলা নেত্রকোণার আটপাড়ার সুখারী গ্রামের সরকার পাড়ার বিধান কুমার সরকার (সজিব), বাদল চন্দ্র ঘোষকে সপরিবারে, কল্যাণী রাণী সরকার, জীবন চন্দ্র সরকার, প্রণতি সরকার, অজিতা বিশ্বাসসহ আরো হিন্দু পরিবার দেশত্যাগে বাধ্য করা;
অভিযোগ ৬: ১৯৭১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকাল অনুমানিক ১০/১১টা থেকে দুপুর আনুমানিক ৩টা পর্যন্ত নেত্রকোণার মদনের মদন গ্রামের ১৫০-২০০ ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করার অপরাধ।