রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যার পঞ্চম দিনে ক্লাস বর্জন করে প্রধান ফটকের সামনে মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
Published : 27 Apr 2016, 12:09 PM
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট, প্রগতিশীল ছাত্রজোট, ইংরেজি বিভাগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বেলা সোয়া ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
পরে শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট।
সাধারণ শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের বুধবারের কর্মসূচিতে ছিল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ক্লাস বর্জন ও ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ।
বুধবার সকালে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ক্লাস চললেও ১০টার পর স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্লাস বর্জন করে ইংরেজি বিভাগের মিছিলে যোগ দেয় অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
সেখান থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে। কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে একটি অংশ মিছিল নিয়ে ফিরে যায়।
একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃত্বে কয়েক হাজার সাধারণ শিক্ষার্থী ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে।
এরপর তারা অবরোধে থেকে ফিরে যায় প্রশাসন ভবনের সামনে। সেখানে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি ঘোষণা করে।
শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেন কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সমন্বয়ক তমাশ্রী দাস।
এদিকে, সাড়ে ১১টার দিকে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরাও মহাসড়ক অবরোধ করে।
এছাড়া প্রশাসন ভবনের সামনে মিছিল করেছে ছাত্রলীগ।
অবরোধ চলাকালে মহাসড়কে দুপাশে কয়েকশ যানবাহন আটকা পড়তে দেখা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকলেও তারা শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে বাধা দেয়নি।
মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীদের স্লোগানে ক্যাম্পাস মুখর হয়ে ওঠে। তারা ‘আমার পিতা মরল কেন’, ‘আমার শিক্ষক মরল কেন’? ‘বিচার চাই, বিচার চাই’ স্লোগান দেয়।
এর আগে মঙ্গলবার পর্যন্ত ইংরেজি বিভাগে সকল ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার রাবি শাখা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের ডাকে বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস বর্জন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ডাকে রোববার ও সোমবার দুই দিনের ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করা হয়।
সোমবার সকালে আয়োজিত মানববন্ধন শেষে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে দিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছে শিক্ষক সমিতি।
গত শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় রাজশাহীর শালাবাগান এলাকায় নিজ বাসা থেকে ৫০ গজ দূরে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিমকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় সেদিনই নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন ওই শিক্ষকের ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ। গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে।
এ ঘটনায় পুলিশ নগরীর এক ওয়ার্ড শিবির নেতা, অধ্যাপক রেজাউল করিমের গ্রামের বাড়ির এক মসজিদের ইমাম ও এক মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ।