কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলায় তার পরিবারের সদস্যদের সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া সিআইডি।
Published : 03 Apr 2016, 01:42 AM
শনিবার বিকাল ৩টায় তনুর বাবা ইয়ার আহমেদ, মা আনোয়ারা বেগম, ভাই নাজমুল হোসেন ও আনোয়ার হোসেন এবং খালাত বোন লাইজু জাহানকে কুমিল্লা সিআইডির কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল কাহার আখন্দর নেতৃত্বে সিআইডির একটি দল।
রাত সাড়ে ৯টায় তাদের ক্যান্টনমেন্টের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আব্দুল কাহার আখন্দ সাংবাদিকদের বলেন, “যারা ভিকটিম তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি, ঘটনা জানার চেষ্টা করছি। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। বাকিটা পরে বলতে পারব।”
কুমিল্লা-নোয়াখালীর সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার নাজমুল করিম খান বলেন, “যেহেতু মেয়ে, বোন, মারা গেছে, তাদেরও তো কিছু বলার অধিকার আছে। তাই তনুর পিতা-মাতা ও ভাই-বোনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, যদি নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়।
“যদি আবারও প্রয়োজন পড়ে তাহলে আবারও ডাকা হবে। এর আগেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, আজও করছি, প্রয়োজন হলে বারবার ডাকা হবে। এছাড়া তনুর মা-বাবার চিন্তায় যদি বিশেষ কিছু থাকে তাহলে তারাও তা বলতে পারেন, সেটি নিয়েও আমরা চিন্তা করব। তদন্তের প্রয়োজনে সব দিক বিবেচনা করতে হয়।”
তিনি বলেন, “অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল কাহার আখন্দর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আলোর মুখ দেখতে চাই। সব দিক বিবেচনা করে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সিআইডি মাত্র কাজ শুরু করেছে।”
তনু হত্যা মামলাটি পুলিশ থেকে প্রথমে ডিবিতে, তারপর সিআইডিতে পাঠানো হয় তদন্তের জন্য।
তনুর পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদের আগে সিআইডির দলটি যেখানে তনুর মৃতদেহ পড়ে ছিল সেই জায়গা পরিদর্শন করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পিআইবির বিশেষ পুলিশ সুপার জুলফিকার আলী হায়দার, এটিএম ফারুক আহমেদ, এসআই আবদুল বাতেন মৃধা, এসআাই মো. শাহ আলম, এসআই সোহরাব হোসেন, কুমিল্লা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি একে এম মঞ্জুরুল আলম, কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুল রব ও ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সাইফুল আহমেদ।
গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকার কালো পানির ট্যাংকি সংলগ্ন জঙ্গল থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশের ধারণা। ঘটনার ১২ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
এরই মধ্যে তনুর লাশ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয়বারের মতো ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি বা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহের কাজের সঙ্গে তারা যুক্ত নন; সেনা কর্তৃপক্ষই করেছে।
এ বিষয়ে ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সাইফুল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেনা কৃর্তপক্ষ থেকে যা দেওয়া হয়েছে তাই আমি পেয়েছি। নিজে থেকে কিছুই সংগ্রহ করতে পারিনি।”
সেনানিবাসের মতো সুরক্ষিত এলাকায় তনুর হত্যার বিষয়টি দেশ জুড়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কুমিল্লা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে খুনের বিচার দাবিতে হয়েছে বিক্ষোভ।
রোববার সারাদেশে ধর্মধট ডাকা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে, যা সমর্থন পেয়েছে বেশিরভাগ ছাত্র সংগঠনের।