কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে কুমিল্লা।
Published : 24 Mar 2016, 09:21 PM
বৃহস্পতিবার দিনভর কলেজ ক্যাম্পাস ও নগরের প্রাণকেন্দ্র কান্দিপাড় পূবালী চত্বরের সড়ক অবরোধ করে ভিক্টোরিয়া কলেজ কুমিল্লা সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
‘তনু হত্যার বিচার চাই’সহ প্রতিবাদী স্লোগানে কণ্ঠ মেলায় কুমিল্লার বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মানববন্ধন ও পথসভা থেকে হত্যাকারীদের আটক করতে প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয় তারা।
কুমিল্লা ক্যান্টমেন্ট বোর্ডের কর্মচারী ইয়ার হোসেনের মেজো সন্তান তনু। সেনানিবাসের ভেতরে অলিপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে তারা। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তনু ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের কর্মী ছিলেন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “হত্যা মামলাটি রহস্য উন্মোচনে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে। হত্যাকারী বা এ হত্যার পেছনে যত শক্তিশালী লোকই থাকুক না কেন, পুলিশ তাদের খুঁজে বের করবে।”
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুর রব বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। খুব শিগগিরই হত্যাকারীদের আটক করা হবে।
“আমাদের পুলিশ সুপারসহ ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারাও ঘটনা নিয়ে কাজ করছে।”
বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা আশা করি আপনাদের যেন আর কষ্ট করে আন্দোলন করা না লাগে। এজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
কুমিল্লা জেলা পরিষদ প্রশাসক মো. ওমর ফারুক মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে বলেন, “সবার মতো আমিও তনু হত্যাকারীদের বিচার চাই। সেনাবাহিনীদের এলাকার নিরাপত্তার বেষ্টনীর মধ্যে তনুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
“এ হত্যাকাণ্ডের সাথে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির মাধ্যমে প্রমাণ করে দিতে হবে, যেন ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ড কেউ করার সাহস না পায়।”
রোববার রাতে (২০ মার্চ) ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকায় থেকে পুলিশ তনুর লাশ উদ্ধার করে। সোমবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। ওই দিনই তার বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করলেও এখনও পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
একটি নিরাপত্তা বেষ্টিত এলাকায় কীভাবে এমন ঘটনা ঘটতে পারে এ প্রশ্ন করেন ফারহানা।
এদিকে সেনানিবাসের ভেতরে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও
জেলা পরিষদের প্রশাসক ও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, “সেনানিবাসের ভেতরে এ হত্যাকাণ্ড কিছুতেই মানতে পারছি না। ক্যান্টনমেন্টে মানুষ খুন হয় কীভাবে?”
গত রোববার রাতে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকায় একটি কালভার্টের কাছ থেকে তনুর (১৯) লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ আলামত দেখে তনুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল।