ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ৬১০ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে ১৯০ হেক্টর জমির আধাপাকা ও পাকা আমন ধান এবং ৪২০ হেক্টর জমির মৌসুমি ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সকালে চাঁদপুর সদরের বাগাদী ইউনিয়নের ছোবহানপুর, বাগাদী গ্রাম, নানুপুর, বালিয়া ইউনিয়নের সাপদি, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১ নম্বর বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সকদি রামপুর ও আশাপাশের এলাকায় গিয়ে আমন ধানের অধিকাংশ জমি পানিতে তলিয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ছোবহানপুর ও বাগাদী গ্রামের জমিগুলোতে কৃষকরা পাকা ধান দুদিন আগে কেটে জমিতে শুকানোর জন্য রেখেছেন। সেসব জমিতে এখন হাঁটু সমান পানি। অনেক জমির পাকা ও আধাপকা ধান বাতাসে নুয়ে পড়েছে। এসব এলাকার খাল ও নালা ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই।
ছোবহানপুর মাঠে দুদিন আগে কেটে রাখা ধান পানি থেকে তুলে আনছেন কৃষক মো. হাবিব।
তিনি জানান, এ বছর তিনি পৌনে ৩ একর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। অধিকাংশ জমি এখন পানির নীচে। প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন কী করবেন তিনি বুঝতে পারছেন না।
বাগাদী মাঠের কৃষক হাবিব বেপারী ও ওবাদ শেখ জানান, তাদের পুরো মাঠের অধিকাংশ জমির ধান হাঁটু সমান পানির নীচে। অনেকেই ধান কেটে শুকানোর জন্য দু-তিন দিন আগে রেখেছেন। চিন্তাও করতে পারেননি ঘূর্ণিঝড়ে এমন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের কৃষক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, সকদিরামপুর মাঠে তিনি দেড় একর জমিতে বিআর-৪৯, বিনা-৭ ও ১৭ ধানের আবাদ করেছেন। আগে কেটে রাখা ধান শ্রমিক নিয়ে তুলছেন। পানিতে ভিজে যাওয়ার কারণে ওজন বেড়ে গেছে।
একই এলাকার আরেক কৃষক আব্দুল খালেক বেপারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানালেন, প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে এক একর জমিতে বিআর-২২ জাতের ধানের আবাদ করেছেন। এই ধানগুলো উচ্চতায় অনেক বড়। যার ফলে ঘুর্ণিঝড়ে বাতাসের তীব্রতায় সব ধান জমিতে নুয়ে পড়েছে। এ বছর তিনি বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন। তিনি সরকারের কাছে সহায়তা কামনা করেন।
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাফায়েত আহম্মদ সিদ্দিকী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আধাপাকা ও পাকা রোপা আমান ১৯০ হেক্টর, সরিষা ১৪০ হেক্টর, আগাম শীতকালীন সবজি ২৭০ হেক্টর ও ১০ হেক্টর জমির ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
“আমাদের কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। জরিপ কার্যক্রম শেষ হলে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে”, যোগ করেন সাফায়েত আহম্মদ।