কক্সবাজার সরকারি কলেজে মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
Published : 08 Feb 2025, 05:43 PM
আগে চব্বিশের গণহত্যার বিচার, তারপর অন্য কাজ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
তিনি বলেছেন, “আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না, তবে অবশ্যই অপকর্মের বিচার চাই। সব খুনের বিচার হতে হবে। বিশেষ করে ২৪-এর গণহত্যার বিচার অবশ্যই হতে হবে। আগে বিচার তারপর অন্য কাজ। তা না হলে শহীদের আত্মা কষ্ট পাবে।”
শনিবার সকালে কক্সবাজার সরকারি কলেজে মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াতে ইসলাম মেজরিটি মাইনরিটি মানে না উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশে যারাই জন্মগ্রহণ করেছে, তারা এদেশের মর্যাদাবান গর্বিত নাগরিক। ইসলাম কারো ওপর জোর খাটানোর কোনও অধিকার রাখে না। অন্য ধর্মও কোনও ধর্মের উপর জোর খাটাতে পারবে না, যদি সেটি ধর্ম হয়ে থাকে।
“সমাজে সংখ্যাগুরু এবং সংখ্যালঘুর বলে যুদ্ধ লাগিয়ে রাখা হয়েছিল। এখানে মেজরিটি মাইনরিটি বলে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের ভাই বোনদের নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের সম্পদ গ্রাস করা হয়েছে, জায়গা জমি দখল করা হয়েছে এমনকি ইজ্জতের উপর হাত দেওয়া হয়েছিল। ক্ষেত্র বিশেষে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর দোষ দেওয়া হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর উপর।”
ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোথায় কোথায় জামায়াতের কর্মীরা এসব অপকর্ম করেছে, তা সুস্পষ্ট করে নাম ঠিকানা দিয়ে আমাদের সাহায্য করুন।
“আপনাদেরকে কথা দিচ্ছি, ন্যায়বিচার আমরা আপনাদের হাতে তুলে দেব। আমরা নিশ্চিত এই অপকর্মের সঙ্গে আমাদের সহকর্মীরা জড়িত নয়।”
চব্বিশের আন্দোলনকারীদের সম্মান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, “তোমাদের নেতৃত্বে আমরা ছিলাম। সাড়ে ১৫ বছর আন্দোলন করেছি। কিন্তু স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে পারিনি। এটাই সত্য কথা। কিন্তু সাড়ে ১৫ বছরের ধারাবাহিকতায় তোমাদের নেতৃত্বে জাতি শেষ আঘাতটা ফ্যাসিজমের উপর দিয়েছিল এবং জাতি সফল হয়েছে।”
শফিকুর রহমান বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ স্বাধীনতা অর্জন করার পর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আমরাও সেভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব, সেটা ছিল আমাদের আশা। কিন্তু বাস্তবে সে আশা পূরণ হয়নি।
“যদি বলি একেবারেই পূরণ হয়নি, তাহলে কথাটা সত্য হবে না। কিন্তু পূরণ হবার বিশাল প্রত্যাশা মানুষের ছিল। একটা স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা আমরা এখনো পেলাম না।”
তিনি বলেন, “আইনের অঙ্গনে যারা বেআইনি কর্মকাণ্ড করেছেন, প্রধান বিচারপতির দরজায় যারা লাথি দিয়েছিল, আওয়ামী লীগ তাদের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বানিয়েছিলেন। এদের কাছ থেকে বিচার পাওয়া যাবে না এটাই স্বাভাবিক।
“তাই অবিচারের শিকার হয়ে আমাদের ১১ জন কলিজার টুকরা শীর্ষ নেতা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। তাদেরকে ঠান্ডা মাথায় বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে।”
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বক্তব্য নিয়ে পুলিশ সদস্যদের ফাঁদে পা না দেওয়ার অনুরোধ করেছেন শফিকুর রহমান।
সম্মেলনে কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মদ আনোয়ারি সভাপতিত্বে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, মুহাম্মদ শাহজাহান এবং চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমীর শাহজাহান চৌধুরী বক্তব্য দেন।