ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, ছেলের আঘাতে মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
Published : 19 Jun 2024, 06:58 PM
কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় বাবা-মায়ের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়ে মোবাইল ফোনে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া ও কথা-কাটাকাটি দেখে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মা।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সাতানী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের শান্তি মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন তিতাস থানার ওসি কাঞ্চন কান্তি দাস।
মারা যাওয়া বৃদ্ধা মঞ্জুরা বেগম (৬৫) শান্তি মিয়ার স্ত্রী।
শান্তি ও মঞ্জুরা দম্পতির দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। বড় ছেলে নবীর হোসেন ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন, আর ছোট ছেলে বাবুল হোসেন বাহরাইন প্রবাসী।
বৃদ্ধ এই দম্পতি তাদের সাংসারিক খরচের জন্য দুই ছেলের ওপর নির্ভরশীল।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, ছোট ছেলে প্রবাস থেকে মাস শেষে টাকা পাঠালেও বড় ছেলে খুব একটা সংসারে খরচ দেন না। এতে কয়েকদিন পরপরই বড় ছেলে নবীর হোসেনের সঙ্গে বাবা-মা ও মোবাইল ফোনে প্রবাসী ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া হত।
ওই বৃদ্ধার ছোট মেয়ে ফাতেমা আক্তার বলেন, “মঙ্গলবার রাতেও দুই ভাই মোবাইল ফোনে ঝগড়া করেন। এ সময় বাবা-মা দাঁড়ানো ছিলেন বড় ভাইয়ের পাশে। মা তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করছিলেন।
“হঠাৎ দাঁড়ানো অবস্থা থেকে মা মাটিতে পড়ে যান। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা মাথায় পানি ঢেলে মাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
পুলিশ ও এলাকাবাসীর ধারণা, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ওই বৃদ্ধা। তবে ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, ছেলের আঘাতে মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
পরে বুধবার সকালে ওই বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
ফাতেমা আক্তার আরও বলেন, “আমার মায়ের আগে থেকেই ডায়াবেটিস ও হার্টের অসুখ ছিল। আমার ভাই মাকে খুন করেছে- এমন মিথ্যা অপপ্রচার করে যারা ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছে, তাদের বিচার যেন আল্লাহ করেন। তাদের কারণে আমার বৃদ্ধা মায়ের লাশ মর্গে নিয়ে কাটাছেঁড়া করা হয়েছে।”
ওসি কাঞ্চন কান্তি দাস বলেন, “ওই বৃদ্ধার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এছাড়া পরিবারের পক্ষ থেকেও হত্যার অভিযোগ করেনি কেউ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি।
“এরপরও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক থাকায় মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।”