বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে পটুয়াখালীতে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা পড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বেশকিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত এ জেলায় ২০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাহবুবা সূখী।
পটুয়াখালী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঝড়ে সদর উপজেলার বোতলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কাঁচাঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া রাঙ্গাবালীতে ছয়টি কাঁচাঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে।
পটুয়াখালী কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত মুশুলধারে বৃষ্টি হয়েছে। জমিতে হেলে পড়েছে রোপা-আমন ধান। আট উপজেলার প্রায় অনেক জমির আধা-পাকা ধান বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতের আগাম সবজি।
কালিকাপুর ইউনিয়নের শারিকখালী গ্রামের কৃষক মোতালেব মিয়া বলেন, “সবেমাত্র ধানে ফুল এসেছে, এই সময়ে অতিবৃষ্টি ও বাতাসের কারণে ধানে চিটা ধরে যাবে। ঘরে তোলার সময় ধানের বদলে চিটা বেশি পাওয়া যাবে। বাতাসে ধান গাছ হেলে পড়ে পানিতে ডুবে থাকলে ক্ষতি আরও বেশি হবে।”
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ির উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ায় ধানসহ কৃষির বেশ ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এবার পটুয়াখালীতে এক লাখ ৯১ হাজার ১১৯ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে; এর মধ্যে ৫ ভাগ পাকা ও ২০ ভাগ আধাপাকা অবস্থায় আছে। এ ছাড়া ৭৫ ভাগ ধানে ফুল আসছে। ঝড় হাওয়ায় ধানে চিটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফুল অবস্থায় ধান কাটা সম্ভব নয়; তবে যাদের পেকেছে তাদের ধান কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা।
ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন বলেন, ঝড়ে জেলায় মোট ১৩৩টি ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দশমিনা উপজেলায় ৭৫টি, রাঙ্গাবালী ২৬টি, মির্জাগঞ্জে ১৯টি, দুমকিতে ৯টি, কলাপাড়ায় দুটি, বাউফল ও সদর উপজেলা একটি করে ঘর রয়েছে।
তবে এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান এ ত্রাণ কর্মকর্তা।