গত ২৯ অগাস্ট সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল মনসুরনগর ইউনিয়নের বামনজানি বাজারের পাশে আলী পাগলার মাজার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
Published : 04 Sep 2024, 10:19 PM
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় এবার আরেক মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এ হামলায় জড়িত বলে স্থানীয়দের দাবি।
মঙ্গলবার বিকালে সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে ইসমাইল পাগলার মাজারে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এর আগে ২৯ অগাস্ট সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল মনসুরনগর ইউনিয়নের বামনজানি বাজারের পাশে আলী পাগলার মাজার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে।
পরে ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া স্থানীয় শালগ্রাম জামে মসজিদের ইমাম গোলাম রব্বানীকে চাকরিচ্যুত করেন গ্রামবাসী।
এদিকে, বুধবার দুপুরে ইসমাইল পাগলার মাজারে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে লোহার রেলিং, কাচসহ মূল মাজারটিতে ভাঙচুর করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষাদর্শীরা জানান, হামলার আগে মাদ্রাসা ছাত্রসহ আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার লোক স্থানীয় কান্দাপাড়া হাটে জড়ো হন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তারা মাজারে হামলা চালান।
হামলাকারীরা হাতুড়ি, রড, শাবল ও লাঠিসোঁটা দিয়ে মাজারের বিভিন্ন স্থাপনায় আঘাত করেন। এরপর তারা দান বাক্স ও পাশেই থাকা খাদেমের ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে নগদ টাকা ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী শামসুল ইসলাম বলেন, “হামলার কথা আগে থেকে জানতে পেরে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা মাজার এলাকায় আসেন। তারা গ্রামবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে চলে যান। এরপর বিকালে মাদ্রাসা ছাত্রসহ আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার লোক হামলা চালিয়ে মাজারে ভাঙচুর ও লুটপাট করেন।”
স্থানীয় সিরাজুল ইসলাম বলেন, “প্রতি বৃহস্পতিবার ইসমাইল পাগলার ভক্তরা মাজারে এসে জিকির-আসগার করতেন। এখানে অশ্লীল কোনো কার্যক্রম হত না।”
সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংবাদ পেয়ে মাজার ভাঙার আগে এবং পরে সেনাবাহিনী ও আমরা (পুলিশ) ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মাজার ভাঙার বিষয়ে থানায় এখনো কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ইসমাইল পাগলা প্রসঙ্গে তার চাচি বৃদ্ধা সালেহা বেগম জানান, ২০১৩ সালের এপ্রিলে (বাংলা ২৭ চৈত্র) ইসমাইল পাগলার মৃত্যু হয়। রাতে হলেও দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত তার জানাজায় ছুটে আসেন। পরে বাড়ির পাশে নিজস্ব জায়গায় তাকে দাফন করা হয়। ইসমাইলের ভক্তরাই এই মাজার তৈরি করেছেন। প্রতি বছর তার মৃত্যুবার্ষিকীতে এখানে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে আসছে।