আসামিদের মধ্যে ধলিয়া ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা হানিফ রাজু ও জসিম বাবুলও রয়েছেন।
Published : 30 May 2023, 09:32 PM
‘পাওনা টাকা পরিশোধের’ কথা বলে ফেনীতে এক গৃহবধূকে ডেকে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয় একাধিক যুবলীগ নেতাসহ সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ফেনী মডেল থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন জানান, ওই গৃহবধূ এ ঘটনায় গত রোববার [২৮ মে] ফেনী মডেল থানায় মামলা করেছেন। এরপরই ওই মামলার প্রধান আসামি গৃহবধূর এক আত্মীয়কে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
ওসি জানান, মঙ্গলবার প্রধান আসামি জয়নাল আবদীন রুবেলকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক কামরুল হাসান দুইদিন মঞ্জুর করেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ রাজু, ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জসিম বাবুল ও সোহেল। বাকিদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
মামলার বরাতে পুলিশ জানায়, ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ধলিয়ার বাসিন্দা ওই গৃহবধূর স্বামী তার ঘনিষ্ঠ স্বজন জয়নাল আবদীন রুবেলের কাছে ৫০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছেন। এই গৃহবধূ [মামলার বাদী] বিভিন্ন সময় পাওনা টাকা চাইলে রুবেল সময়ক্ষেপণ করেন।
এক পর্যায়ে গত ২৫ মে বিকালে পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে রুবেল এই নিতে বাদীকে বোর্ড অফিসের সামনে ডেকে নেন। সেখান থেকে অটোরিকশায় তুলে পূর্বধলিয়ায় একটি টিনশেড ঘরে নিয়ে যান।
সেখানে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হানিফ রাজু, ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জসিম বাবুল, সোহেল এবং প্রধান আসামি রুবেল বাদীকে ধর্ষণ করেন।
এক পর্যায়ে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন রুবেল ও সহযোগীরা। ওই ঘটনার বিষয়ে থানা-পুলিশে না যেতে গৃহবধূ থেকে একশ টাকা মূল্যের তিনটি সাদা স্ট্যাম্পে আসামিরা স্বাক্ষর নেন।
ফেনী মডেল থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন জানান, ঘটনার দুই দিন পর গত ২৭ মে দুপুরে রুবেল ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বাদীর কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর [২৮ মে] ওই গৃহবধূ ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন।
“মামলার পরপরই অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।”
মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে ওসি জানান।
ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ধলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আহমেদ মুন্সী জানান, “ধর্ষণের বিষয়টি আমাকে সাংবাদিকরা জানিয়েছেন। ঘটনার সাথে আমার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের নেতা জড়িত থাকায় ইতোমধ্যে দল থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
“তবে যে মহিলা ধর্ষণের মামলা করেছেন তিনি ভালো মহিলা না। এলাকায় তিনি খারাপ কাজ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।”