Published : 05 May 2025, 08:06 PM
জুলাই-অগাস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ২১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। ঘটনার নয় মাস পর মামলার খবরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজমত আলী।
রোববার সকালে ময়মনসিংহ দ্রুত বিচার আদালতে মামলার আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান।
পরে সন্ধ্যায় বিচারক মোছা. নাসিমা খাতুন অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন বলে জানান আজমত আলী।
মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার জাকিবুল হাসান রনি, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বঙ্গবন্ধু কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আহসান লিমন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছাব্বির আহম্মেদ ও নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, তরিকুল ইসলাম রানা, প্রকৌশল শাখার প্রকল্প পরিচালক (পিডি) জোবায়ের হোসেন, অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আ. হালিম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ হুমায়ন কবীর, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সহকারী রেজিস্ট্রার ইব্রাহীম খলিল শান্ত, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সেকশন অফিসার আপেল মাহমুদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার নুসরাত জাহান শিমু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মোসাররাত শবনম, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিম আল মামুন, উজ্জ্বল কুমার এবং মো. নজরুল ইসলাম।
মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, জুলাই-অগাস্টে কোটাবিরোধী আন্দোলন দমনে ৩ অগাস্ট ‘হাসিনায় আস্থা’ নামে ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।
সেই সমাবেশে তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাসে সশস্ত্র মহড়া দেন। ৪ অগাস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে যাওয়ার প্রস্তুতির সময় আন্দোলনকারীদের ওপর আসামিরা সশস্ত্র হামলা চালায়। এ সময় গুলি ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে কমপক্ষে ১২ শিক্ষার্থী আহত হয়।
এক পর্যায়ে আসামিরা বেশ কিছু মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ভাঙচুর করেন। ঘটনার প্রায় নয় মাস পর দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ভুক্তভোগী এই মামলা করেন।