“আওয়ামী লীগের কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মিথ্যা মামলায় ৬ বছর ভুগতে হলেও ন্যায় বিচার পেয়ে খুশি হয়েছি,” বলেন বিএনপির এ কেন্দ্রীয় নেতা।
Published : 18 Nov 2024, 07:40 PM
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদসহ দুই আসামি।
সোমবার বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. গোলাম ফারুক এক আদেশে মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেন বলে জানিয়েছেন বেঞ্চ সহকারী মো. নাজমুল হাসান।
অব্যাহতি পাওয়া অন্যজন হলেন, ভোলার লালমোহন উপজেলার কাদিরাবাদ এলাকার বাবুল বিশ্বাস।
২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভোলার লালমোহন থানায় হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন উপজেলার বদরপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও বদরপুর (দক্ষিণ) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল হক।
মামলার নথির বরাতে বেঞ্চ সহকারী নাজমুল হাসান বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা-৩ আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ। ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর লালমোহন পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসভবনে তার অবস্থানের সময় মোবাইল ফোনে বলা কথার একটি রেকর্ড ফাঁস হয়।
এ ঘটনায় পরস্পর যোগসাজসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট ও ডিজিটাল বিন্যাসে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদুল।
লালমোহন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বশির আলম ২০১৯ সালের ৩১ অগাস্ট বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিনসহ দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
বেঞ্চ সহকারী নাজমুল হাসান বলেন, “অভিযোগপত্র দিলেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে ফরেনসিক প্রতিবেদনসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেননি। ফলে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মামলার অভিযোগ গঠনের দিনে আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
এদিকে, মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে সাংবাদিকদের সামনে বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, “ভোলার লালমোহন ও তজুমদ্দিন থেকে ২০১৮ সালে আমি বিএনপির এমপি প্রার্থী ছিলাম। নির্বাচনের ১৫ দিন আগে আমি লালমোহনের বাসভবনে যাই। তখন পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমার বাসা ঘিরে রাখে।
“নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ১৫ দিন ঘর থেকে বের হতে পারিনি কিন্তু ওই সময় আমার বিরুদ্ধে একটি মামলা দেওয়া হয়। আমি নাকি টেলিফোনে কাকে হুমকি দিয়েছি? প্রার্থী হিসেবে আমি যেখানে নির্যাতিত, সেখানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কারণে ডিজিটাল সিকিউরিট আইনের মিথ্যা মামলায় ৬ বছর আমাকে ভুগতে হয়েছে। তবে দেরিতে হলেও এবং অনেক হয়রানি শিকার হলেও ন্যায় বিচার পেয়ে খুশি হয়েছি।”
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার চাইলে আগামী এপ্রিলের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।”
নির্বাচান সংক্রান্ত যেসব সংস্কার করা দরকার, অন্তর্বর্তী সরকার তা দ্রুত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মেজর হাফিজ আরও বলেন, “দেশে অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কার করতে চায় তা যুক্তিযুক্ত। তবে সেই সংস্কার জনগণের নির্বাচিত সরকার করলে সবচেয়ে ভালো হবে।”