আমদানির খবরেই যশোরে ১০০ টাকার পেঁয়াজ হল ৯০ টাকা

“সরকার আমদানির অনুমতি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা কমে গেল; এতেই বোঝা যায় সিন্ডিকেট কতটা শক্তিশালী।”

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2023, 01:26 PM
Updated : 5 June 2023, 01:26 PM

আমদানির অনুমতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যশোরে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমে গেছে ১০ টাকা। রোববার দুপুরে শহরের বড়বাজারে যে পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সোমবার তারই দাম হয় ৯০ টাকা।

পেঁয়াজের বাজার সহনীয় করতে রোববার বিকালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক জরুরি বার্তায় সোমবার থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার কথা জানানো হয়।

এর আগে, কৃষকের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে গত ১৫ মার্চ থেকে আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছিল।

যশোরের বড়বাজার হাজী মুহাম্মদ মহসিন রোডের কালিবাড়ি মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান জমজম ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী সাদ্দাম হোসেন জানান, সকালে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮২ থেকে ৮৫ টাকা দরে পাইকারিতে  বিক্রি করেছেন।

মূলত ফরিদপুর ও রাজবাড়ি জেলা থেকে ব্যাপারিরা যশোরের আড়তে পেঁয়াজ নিয়ে আসেন জানিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, “ওখানকার পেঁয়াজ যশোরসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা ও হাটবাজারে বিক্রি হয়ে থাকে। ওই অঞ্চলের বড় ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ মজুদ করে রেখে পাইকারি হাটবাজার তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখেন। সরকার কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে আমদানি বন্ধ করে রেখেছিল, আর এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছিলেন মজুদদাররা।”

একই মার্কেটের খুচরা ব্যবসায়ী বিকাশ সাহা জানান, সবশেষ রমজান মাসেও বাজারে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। এমনকি মাত্র এক মাস আগেও ৫০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। এরপরই দাম বাড়তে থাকে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের তদারকি সংস্থাগুলো তৎপর হলে এখনই পেঁয়াজ আমদানি করা লাগত না। কারণ ফলনের হিসেবে এখনও দু’মাস বাজারে দেশি পেঁয়াজের ভরপুর সরবরাহ থাকবে।

বড়বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানে কম পরিমাণ পেঁয়াজ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। কারণ হিসেবে দোকানিরা জানালেন, পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে তারাও বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ দোকানে তোলা বন্ধ রেখেছেন।

এই বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন শহরের বারান্দিপাড়ার বাসিন্দা রিয়াজুল হক। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার আমদানির অনুমতি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা কমে গেল। এতেই বোঝা যায় সিন্ডিকেট কতটা শক্তিশালী। এই সিন্ডিকেট না ভাঙা পর্যন্ত দেশে অসাধু ব্যবসায়ীদের অরাজকতা চলতেই থাকবে।”

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি। বর্তমানে মজুদ আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন। তবে সংরক্ষণের অভাবে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়, সেটিও হিসাব করা হয়।

টিসিবির তথ্যমতে, গত বছর এই সময়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেজি বিক্রি হয়েছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। 

আরো পড়ুন:

Also Read: দর ১০০ টাকা ছোঁয়ার পর পেঁয়াজ আমদানিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সায়

Also Read: ‘পেঁয়াজ আমদানি ছাড়া উপায় নেই’, কৃষি মন্ত্রণালয়কে বাণিজ্যের চিঠি

Also Read: দাম বাড়লে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি ‘শিগগিরই’: কৃষিসচিব