ফরিদপুরে ‘যুবলীগের হামলায়’ স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মিসভা পণ্ড, আহত ২৭

তবে হামলার কথা অস্বীকার করেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2022, 08:08 PM
Updated : 28 Sept 2022, 08:08 PM

ফরিদপুরে যুবলীগের হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মিসভা পণ্ড হয়ে গেছে; এতে সংগঠনটির অন্তত ২৭ নেতাকর্মী আহত হওয়ার দাবি করা হচ্ছে। 

বুধবার বিকাল ৪টার দিকে শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে এ ঘটনা ঘটে বলে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন জানান।

তার অভিযোগ, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান ওরফে মিঠু ও ফরিদপুর পৌরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান শামীমের নেতৃত্বে রামদা, রড, বাটাম, লাঠি নিয়ে ৫০-৬০ জন এ হামলা চালায়।

কর্মিসভায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এমএম জিলানী ও জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ইয়াছিন আলী ছিলেন। তবে হামলাকারীরা তাদের আঘাত না করে হল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথ করে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে অম্বিকা হল চত্বরে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম জিয়াউর রহমানের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয়। পরে বেলুন উড়িয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন হলে ঢোকেন। সেখানে নেতারা আসন গ্রহণের সময় হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, প্রথমে যুবলীগের ১০-১৫ নেতা হলরুমে হামলা করলে প্রতিরোধ করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা। এর ৩-৪ মিনিট পর যুবলীগের ৫০-৬০ জন ব্যক্তি ওই কর্মী সমাবেশের হামলা করেন। এতে স্বেচ্ছাসেবক দলের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন। পিটিয়ে আহত করা হয়ে ১২ বছর বয়সী মাইক অপারেটরকে। পরে হামলাকারীরা চেয়ার, সাউন্ড বক্স, মাইক্রোফোন ভাঙচুর করে।

হামলার সময় হলরুম ও এর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য ছিলেন না। পরে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক এমএ জলিলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়; তখন কোনো পক্ষই সেখানে ছিল না।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জুলফিকার হোসেন বলেন, “হামলায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাফিজ, সদর উপজেলার আহ্বায়ক আবুল কালাম, সদর উপজেলার সদস্য সচিব মামুন হাসান, ফরিদপুর সদরের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ইদ্রিস বেপারি, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আহ্বায়ক রেজাউল তালুকদারসহ অন্তত ২৭ জন আহত হন।”

“তাদের মধ্যে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে একজন ও ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতালে তিনজন ভর্তি আছেন। বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।”

হলরুমে এ কর্মিসভার জন্য ডিসি ও এসপির অনুমতি নেওয়া ছিল বলেও তিনি জানান।

পরিদর্শক এমএ জলিল বলেন, “কর্মিসভা চলাকালীন হামলা চালায় যুবলীগ; ফলে সভাটি পণ্ড হয়ে যায়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।”

পৌর কাউন্সিলর মতিউর রহমান বলেন, “ওখানে জেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে সমবেত হয়েছিল। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। পরে শুনতে পারি, হলে হামলা-ভাঙচুর হচ্ছে। শুনে আমি পৌরসভার মালিকানাধীন হলটি রক্ষা করতে এগিয়ে যাই ও থানায় খবর দেই।”

হামলা করেননি বরং হামলার কবল থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের রক্ষা করেছেন দাবি করে তিনি বলেন, “এটা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কও জানেন।”

জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান বলেন, “দলীয় কর্মসূচি থাকায় যুবলীগের নেতাকর্মীরা অম্বিকা হলের সামনে জড়ো হয়; পরে মিছিল করে অনুষ্ঠানস্থলে যায়। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুবলীগ কর্মীরা সেখানে সমবেত হয়।”

তিনি বলেন, “তবে আমরা জানতাম না সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভা চলছে। আমি দাঁড়িয়ে থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের হল থেকে বের হতে সাহায্য করেছি।”

হামলার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, “এ ঘটনায় কেউ আহত বা চেয়ার-সাউন্ড বক্স ভাঙচুর করা হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।”