পাউবোর প্রকৌশলী বলেন, “ফারাক্কার সব গেইট খুলে দেওয়া হলেও পাবনায় বন্যার আশঙ্কা নেই; তাছাড়া নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়া এখন স্বাভাবিক বিষয়।”
Published : 28 Aug 2024, 08:32 PM
ফারাক্কা ব্যারেজের সব গেইট খুলে দিলেও পদ্মা ও যমুনা নদীর পাবনা অংশে পানি বাড়েনি।
পদ্মা নদীর ঈশ্বরদীর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্ট এবং যমুনা নদীর বেড়া উপজেলার মথুরা পয়েন্টে বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনদিন ধরে দুই পয়েন্টের পানি স্থিতিশীল রয়েছে।
পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টের পানি উন্নয়ন বোর্ডের রিডার হারিফুন নাঈম ইবনে সালাম বুধবার বিকালে বলেন, “২৬ অগাস্ট থেকে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি স্থির অবস্থায় রয়েছে। গত দুইদিনে এখানে পানির উচ্চতার পরিমাপ করা হয় ১১ দশমিক ৯৮ মিটার। ২৫ অগাস্ট এ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৯৭ মিটার।
“অন্যদিকে বেড়া উপজেলার যমুনা নদীর মথুরা পয়েন্টে পানির স্তর ৭ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। কয়েকদিন ধরে এখানেও পানির পরিমাণ স্থির রয়েছে।”
পাকশীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, “শুনেছি ফারাক্কার সব গেইট খুলে দিয়েছে। এতে শঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম। কিন্তু সকালে নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে এলে পানি বাড়ার তেমন লক্ষণ দেখিনি।”
ঈশ্বরদীর লক্ষীকুণ্ডা পদ্মা নদী পাড়ের বাসিন্দা আব্দুল বারেক বলেন, “ভারত সব গেইট খুলে দিয়েছে শুনে আমরা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। কারণ আমাদের এখানে এর আগে বহু ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। আবার নদী ভাঙনের কবলে অনেকে এখন অন্য জায়গায় চলে গেছে। পরদিন তেমন কোনো পানি বাড়ার লক্ষণ দেখিনি।”
এদিকে বেড়া উপজেলার কাজিরহাট ঘাট এলাকার সাদ্দাম হোসেন বলেন, “যমুনা নদীতে গত দুইদিন হলো পানি কমতে শুরু করেছে।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পাবনার সহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন বলেন, “ভারত ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি গেইট খুলে দিলেও এখনো পর্যন্ত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি বাড়েনি। এ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৮০ মিটার। এখন পানির উচ্চতা ১১ দশমিক ৯৮ মিটার। বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।”
পাউবো পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “ফারাক্কার সব গেইট খুলে দেওয়া হলেও পাবনা অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা নেই। কারণ যমুনার পানি যখন কমে, তখন পদ্মার পানি বাড়ে। একই সময়ে যমুনার পানি কমলে এবং পদ্মার পানি বাড়লে বন্যা হবে না। এখন যমুনার পানি দ্রুত কমছে। সুতরাং বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে আমাদের বিশ্বাস।”
তিনি বলেন, “পানি যদি বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৮০ অতিক্রম করে এবং ১৫ বা ১৬ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় তখন বাঁধের জন্য ঝুঁকি হতে পারে। তবে পাবনা জেলায় বাঁধ ভাঙার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া নিচু এলাকা প্লাবিত হবে এখন স্বাভাবিক বিষয়।”