“পাপিয়াকে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গেই সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে; এখানে অন্য বন্দিরা যেভাবে থাকেন তিনিও সেভাবেই থাকবেন।”
Published : 04 Jul 2023, 08:01 PM
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে, তবে তার ওপর বিশেষ নজর থাকবে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানটি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কুমিল্লায় এসে পৌঁছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রুনা নামের এক হাজতিকে নির্যাতন করার অভিযোগে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন নির্যাতিতের ভাই। পরে দুটি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে পাপিয়াকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যেহেতু মারধরের ঘটনায় পাপিয়াকে কাশিমপুর থেকে কুমিল্লায় স্থানান্তর করা হয়েছে- সেজন্য তার বিষয়ে বাড়তি কোনো সতর্কতা অবলম্বন করা হবে কি-না তা জানতে চান সাংবাদিকরা।
কাশিমপুর থেকে কুমিল্লা কারাগারে পাপিয়া, নির্যাতনের শিকার হাজতি হাসপাতালে
জবাবে জেল সুপার বলেন, “পাপিয়াকে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গেই সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এখানে অন্য বন্দিরা যেভাবে থাকেন তিনিও সেভাবেই থাকবেন। তবে কুমিল্লা কারাগারে যেন কাশিমপুরের মতো ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা সতর্ক থাকব।”
কুমিল্লা কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই কারাগারে দুটি নারী ওয়ার্ড রয়েছে। ছোটটিতে গর্ভবতী ও সন্তানসহ নারী বন্দিদের রাখা হয়। আর বড়টিতে রাখা হয় অন্যদের। সেখানে প্রায় অর্ধশত বন্দি একসঙ্গে থাকতে পারেন। এই ওয়ার্ডেই পাপিয়া প্রথম রাত পার করেছেন। অন্য কয়েদিদের মতই ছিল তার খাবার ও ঘুমানোর ব্যবস্থা।
২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে জেলবিধি অনুযায়ী পাপিয়াকে ‘রাইটার’ হিসেবে কাশিমপুর কারাগারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রায় ৪০ মাস তিনি সেই কারাগারে বন্দি ছিলেন।
এর মধ্যে গতমাসে নথি চুরির একটি মামলায় শিক্ষানবিস আইনজীবী রুনা লায়লাকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে তল্লাশি করে কর্তব্যরত মেট্রন তার কাছে সাত হাজার ৪০০ টাকা পান। ওই টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য পাপিয়া ও তার সহযোগী কয়েদিরা গত ১৯ জুন রুনার ওপর অমানবিক নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ তার পরিবারের।
এনিয়ে কারাগারের ভেতরে কেস টেবিল বা সালিশ বসে। সেখানে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বন্দি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন রুনার পরিবার। ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটিও গঠন করা হয়। এসব কমিটির প্রাথমিক তদন্তে পাপিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরই তাকে কাশিমপুর থেকে কুমিল্লায় স্থানান্তরিত করা হয়।