বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে সব আবাসিক হল খালি করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
Published : 17 Jul 2024, 06:49 PM
কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার দুপুরে দেওয়া এ ঘোষণার প্রতিবাদ ও হল চালু রাখার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বেলা ৩টা থেকে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। এ সময় উপাচার্যের বাসভবনের সামনের সড়কে বসে তাদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কারের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ভাবেই তারা হল ছাড়বেন না। হল ত্যাগে বাধ্য করা হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
আন্দোলনের সমন্বয়ক ইরান মিয়া বলেন, “আমরা কোনো ভাবেই হল ছাড়ব না। যৌক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে ধিক্কার জানাই। নারী শিক্ষার্থীদের হলে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
“প্রয়োজনে আমরা সারা রাত জেগে আমার বোনদের পাহারা দেব। তাও কেউ হল ছাড়বে না। আমাদের হল ছাড়তে বাধ্য করা হলে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীকে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিতে হবে।”
শিক্ষার্থী নূরাইয়া নুসরাত বলেন, “আমরা কোনো ভাবেই হল ছাড়ব না। হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাখান না করা পর্যন্ত আমরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি ছাড়ব না।”
এর আগে সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গায়েবানা জানাজা করেন শিক্ষার্থীরা। জানাজায় শিক্ষকরাও অংশগ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার বিভিন্ন স্থানে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘাত ও সংঘর্ষের পর দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়ার জন্য সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভা বসে। সভায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে সব আবাসিক হল খালি করার সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে সকালে নগরীর রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে মিছিলে নিয়ে জড়ো হতে থাকে কোটা আন্দোলনকারীরা। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে আনন্দ মোহন কলেজ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, নাসিরাবাদ কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে সোমবার হঠাৎ করেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পরের দিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় হয় সংঘাত সহিংসতা।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষে ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ নিহত হন। চট্টগ্রামে দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত হন তিনজন; যাদের মধ্যে একজন দোকান কর্মচারী, একজন ছাত্রদল নেতা এবং অপরজন ছাত্র।
এ ছাড়া ঢাকায় সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় সংঘর্ষে নিহত দুইজনের একজন ফুটপাতের দোকানি ও অপরজন ছাত্রলীগ কর্মী সবুজ আলী।
আরও পড়ুন:
ট্রেন আটকে বাকৃবির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ বন্ধ
ময়মনসিংহে রেলপথে ৬ ঘণ্টা অবরোধ, 'ত্যক্ত-বিরক্ত' যাত্রীরা
কোটা: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ট্রেন আটকে বিক্ষোভ