রংপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও পতিতালয়ে বিক্রি, ২ জনের যাবজ্জীবন

প্রতিবেশী বান্ধবী স্কুলছাত্রীকে ওহিদের কাছে তুলে দিলে তিনি ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর ইয়াসমিনের কাছে বিক্রি করে দেন বলে জানান পিপি।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2023, 06:26 PM
Updated : 8 May 2023, 06:26 PM

রংপুরে বদরগঞ্জ উপজেলার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও পতিতালয়ে বিক্রি দায়ে দুইজনকে যাবজ্জীবন ও একজনকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

সোমবার দুপুরে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রোকনুজ্জামান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা দেন বলে জানান সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জাহাঙ্গীর আলম তুহিন।

যাবজ্জীবন দণ্ডিতরা হলেন, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়ার মানিক মিয়ার স্ত্রী ইয়াছমিন, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লালচাঁদপুর গ্রামের জব্বার শেখের ছেলে আব্দুল ওহিদ।

আট বছর সাজাপ্রাপ্ত এক নারী ওই ঘটনার সময় ১৫ বছর বয়সি কিশোরী ছিলেন; তার বাড়ি বদরগঞ্জ উপজেলায়।

মামলার বরাত দিয়ে পিপি জাহাঙ্গীর আলম তুহিন বলেন, ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর সকালে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সে স্কুল ছুটির পর বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি করে। ওই ছাত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার বাবা বদরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

এরপর স্থানীয় এক ভ্যান চালকের মাধ্যমে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা জানতে পারেন প্রতিবেশী এক বান্ধবীর সঙ্গে তার মেয়ে বদরগঞ্জের আউলিয়াগঞ্জ গিয়েছিল। তার বাবা বিষয়টি পুলিশকে জানান এবং মামলা করেন।

পিপি বলেন, “ওই স্কুলছাত্রীকে পুলিশ উদ্ধার করার পর সে জানায়, তার প্রতিবেশী বান্ধবী তাকে ওহিদের কাছে তুলে দেয়। ওহিদ তাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে রেলস্টেশন এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে ধর্ষণ করে এবং ইয়াসমিনের কাছে বিক্রি করে দেন।

“ইয়াসমিন স্কুলছাত্রীকে ভৈরবের একটি পতিতালয়ে থাকতে বাধ্য করেন। এর কিছুদিন পর ইয়াসমিন তাকে অন্য জায়গায় বিক্রির চেষ্টা করলে কৌশলে বাসে উঠে ওই ছাত্রী পালিয়ে যায়।”

জাহাঙ্গীর আলম তুহিন আরও বলেন, এরপর বাসে এক নারীযাত্রীকে ওই ছাত্রী পুরো বিষয়টি বলে। পরে ওই নারী পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

তবে ভৈরবের পতিতালয়ে তাকে কয়দিন রাখা হয়েছিল এবং সেখান থেকে মেয়েটি কোন সময় পালিয়ে আসতে পেরেছিল তা জানা যায়নি।

২০১৬ সালের ১০ মার্চ এসআই কমল মোহন চাকী আদালতে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দেন।

রায়ে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আসামি ইয়াসমিনকে পাঁচ লাখ ও আব্দুল ওহিদকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে। এ ছাড়া ওই ছাত্রীর বান্ধবী শিশু হওয়ায় তাকে আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।  

এ মামলার আসামি ওহিদ পলাতক রয়েছে এবং মানিক নামে এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম তুহিন।