“ভিকটিমের কোনো নড়াচড়া না দেখে তার কানে থাকা দুল ছিড়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।”
Published : 01 May 2024, 04:10 PM
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাবের ভাষ্য, প্রাথমিকভাবে ওই আসামি জানিয়েছে ধর্ষণের সময় শিশুটি ‘চিৎকার’ করায় তাকে গলা ও মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
বুধবার দুপুরে র্যাব-১১ কুমিল্লা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, আগের রাতে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার ফেরুয়া বাজার এলাকা থেকে ধর্ষক ও হত্যাকারী মফিজুল ইসলাম ওরফে মফুকে গ্রেপ্তার করেন তারা।
গ্রেপ্তার ৩৮ বছর বয়সী মফু কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার খিলপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। তাকে মাদকসেবী বলছে র্যাব।
এর আগে সোমবার উপজেলার গলিয়ারা উত্তর ইউনিয়নের খেয়াইশ গ্রামের ধান ক্ষেত থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, “ভিকটিমের বাবা সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী এবং মা গৃহিনী। গরমের কারণে তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া শিশুটির স্কুল সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ছিল। ঘটনার দিন সে স্কুল থেকে বেলা ১১টার দিকেও বাড়ি ফিরে না আসায় তার মা চিন্তিত হয়ে পড়েন।
“পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর মেয়ের সহপাঠীদের কাছ থেকে জানতে পারেন সে স্কুল ছুটির পর বাড়ি চলে গেছে। তখন মেয়েটির মা কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করার জন্য রওনা করেন। পথে এক ব্যক্তি তাকে মেয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে বলে জানান।”
র্যাবের কর্মকর্তা বলেন, “ঘটনাস্থলে গেলে এক ব্যক্তি জানায় যে, আসামি মফিজুল ইসলাম প্রকাশ মফুকে বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে ঘটনাস্থলের রাস্তার পাশের বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে দ্রুত উঠে আসতে দেখেছেন।
কুমিল্লায় স্কুল থেকে ফেরার পথে শিশুকে 'ধর্ষণের' পর হত্যা
“এরপর শিশুটির মা ওইদিন রাতেই মফুকে একমাত্র আসামি করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সবশেষ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে মফুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।”
গ্রেপ্তার আসামির জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া তথ্যের বরাতে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক বলেন, “মেয়েটি আসামি মফিজুলের প্রতিবেশী এবং পূর্ব পরিচিত। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মফিজুল ঘটনাস্থলের পাশের রাস্তায় ওৎ পেতে ছিল।মেয়েটি স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে কৌশলে তাকে রাস্তার পাশের ধানী জমিতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।
“এক পর্যায়ে শিশুটি চিৎকার করলে মফিজুল তার মুখ ও গলা চেপে ধরে; এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।”
এ সময় মফিজুল ভিকটিমের কোনো নড়াচড়া না দেখে তার কানে থাকা দুল ছিড়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এরপর চাঁদপুরের শাহারাস্তির এক আত্মীয়র বাড়িতে আত্মগোপনে চলে যায় বলে জানান তানভীর মাহমুদ পাশা।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আসামিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ তাকে কুমিল্লার আদালতে তুলেছে।