এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে আতঙ্ক বা ভয় ছড়ানো হচ্ছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক জিগারুল ইসলাম।
Published : 24 Aug 2024, 06:13 PM
পানি ধারণ ক্ষমতার কাছাকাছি ও বিপৎসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় রাঙামাটির কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কপাট রাতে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বাঁধ থেকে পানি ছাড়া হলে এর প্রভাব আশপাশের এলাকায় পড়তে পারে সেজন্য এরই মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের জানান।
তিনি বলেন, “শনিবার রাত ১০টায় হ্রদের ১৬টি স্পিলওয়ে বা জলকপাট খুলে দেওয়া হবে ছয় ইঞ্চি করে। এতে করে প্রতি সেকেন্ডে নয় হাজার সিএফএস পানি হ্রদ থেকে নিষ্কাষিত হয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়বে।
“কাপ্তাই হ্রদের পানি ধারণ ক্ষমতা সাধারণত ১০৯ ফুট। বর্তমানে পানির উচ্চতা প্রায় ১০৭.৬৬ ফুট। ফলে বিপৎসীমার কাছাকাছি হওয়ায় হ্রদের উজান ও ভাটির বন্যা নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
নতুন করে বৃষ্টিপাত বা পানির প্রবাহ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলে গেইট খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে জানিয়ে ব্যবস্থাপক আব্দুজ্জাহের বলেন, “একই সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে আরো ৩২ হাজার সিএফএস পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে। যার মাধ্যমে প্রায় ২১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।”
পানি ছাড়ার আগেই ‘জরুরি বার্তা’ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌবাহিনীর কাপ্তাই ও চট্টগ্রাম ঘাঁটি ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দুপুরে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান বলেন, “বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পানি ছাড়ার বার্তা পেয়েছি। সেই অনুযায়ী রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
তবে রাঙ্গুনিয়ার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জিগারুল ইসলাম বলছেন, “সাধারণত কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেইট খুলে দিয়ে ছয় ইঞ্চি করে পানি ছাড়া হলে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাবই পড়ে না রাঙ্গুনিয়াতে। যদি এটি দেড় বা দুই ফুট উচ্চতায় ছাড়া হয়, তখন নদীর পাড়ের কিছু বসতবাড়ি ডুবে যায়। এবং এর প্রভাব পড়ে রাউজান ও বোয়ালখালির কিছু কিছু এলাকায়।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে আতঙ্ক বা ভয় ছড়ানো হচ্ছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক জিগারুল ইসলাম।
কাপ্তাইয়ের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ঝুলন দত্ত বলছেন, “বাঁধের গেইট খুলে দিলে কাপ্তাইয়ে কিছু হয় না। কারণ পানি সরাসরি কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ে। এতে রাঙামাটি বা কাপ্তাইবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক ও কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, “হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় জলকপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”