পুলিশ বলছে, তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে সঞ্জিতের বাবা ফরিদপুর জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে ছেলে বলে দাবি করেন।
Published : 17 Sep 2024, 09:52 PM
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় হরি মন্দির ও কালী মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক নয় বলে দাবি করছে পুলিশ।
তাকে গ্রেপ্তারের একদিন পর মঙ্গলবার ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এর আগে সোমবার এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিতে জানানো হয়েছিল, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সঞ্জিত বিশ্বাস (৪৫) নামের এক ভারতীয় নাগরিককে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সেই কথা থেকে সরে এখন পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার সঞ্জিত বিশ্বাস ‘ভারতের নাগরিক নন’, তিনি ‘মানসিক ভারসাম্যহীন বা মানসিক বিকারগ্রস্ত’।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন বলেন, “ভাঙ্গার হরি মন্দির ও কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সোমবার আমাদের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হলে সঞ্জিত বিশ্বাসের বাবা নিশিকান্ত বিশ্বাস (৭২) ফরিদপুর জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তিনি জানান যে, আটক ব্যক্তি তার ছেলে। তার নাম সঞ্জিত বিশ্বাস, সেটাও তিনিই জানিয়েছিলেন।
“নিশিকান্ত আরও বলেন যে, সঞ্জিত মানসিকভাবে অসুস্থ। সে প্রায় ২৪-২৫ বছর বয়সে কাজের উদ্দেশ্যে ভারতে গিয়ে দীর্ঘদিন সেখানে থাকার পরে দেশে ফেরেন। এরপর প্রায় চার বছর আগে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়, আর বাড়িতে ফিরে আসেনি এবং পরিবারের সঙ্গে তার কোন যোগাযোগ নাই।”
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, “মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তি ভারতে নাগরিক নন, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বা মানসিক বিকারগ্রস্ত।”
শনিবার রাতের কোন এক সময় ভাঙ্গা বাজারের হরি মন্দিরের কার্তিক ঠাকুরের হাতের আঙুল, ময়ূরের গলা মোচড়ানো, ঘোড়ার কান ও আঙুল, অসুরের হাতের আঙুল এবং কালী মন্দিরের গণেশের হাতের আঙুল ও শুঁড় ভাঙা দেখে ভাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করে মন্দির কমিটি।
এ ঘটনার পর রোববার রাতে কালী মন্দিরের সামনে থেকে সঞ্জিতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার বিকালে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার ইউএনও বি এম কুদরত-এ-খুদা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।
সঞ্জিতকে গ্রেপ্তারের বর্ণনায় এ দিন জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল বলেন, “ঘটনা তদন্তের সময় কালী মন্দিরের সামনে দুজন ব্যক্তিকে পাওয়া যায়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় একজনকে স্থানীয়রা পরিচিত বলে শনাক্ত করেন।
“এ সময় অপর ব্যক্তিকে সন্দেহ হওয়ায় তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন তিনি একবার বাংলা এবং একবার হিন্দি ভাষায় কথা বলতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক পরিচয় দেন।”
সঞ্জিতকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা।