এর আগে রায়পুরায় অনানুষ্ঠানিকভাবে দুইবার হাফ ম্যারাথন হলেও এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়।
Published : 08 Nov 2024, 03:58 PM
নরসিংদীতে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হয়েছে ফুল ম্যারাথন। ‘রায়পুরা ম্যারাথন’ নামের এই আয়োজনে তিন ক্যাটাগরিতে ১৫ জন বিদেশি নাগরিকসহ অংশ নিয়েছেন ছয় শতাধিক দৌড়বিদ।
শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলা এ ম্যারাথনের যৌথভাবে আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন ও রায়পুরা রানার্স কমিটি।
রায়পুরা ম্যারাথন আয়োজক কমিটির সভাপতি মো. আক্তারুজ্জামান জানান, ভোর ৫টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধূরী ম্যারাথনের উদ্বোধন করেন।
এর পর পর্যায়ক্রমে ফুল ম্যারাথন, হাফ ম্যারাথন ও ১০ কিলোমিটারের ম্যারাথনে অংশ নেন দৌড়বিদরা। এর আগে রায়পুরায় অনানুষ্ঠানিকভাবে দুইবার হাফ ম্যারাথন হলেও এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়।
আক্তারুজ্জামান জানান, ম্যারাথনের তিনটি ক্যাটাগরিতে ৬০০ জনের বেশি দৌড়বিদ অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ড, রাশিয়া ও চেক রিপাবলিকের নাগরিক।
ভোর ৫টায় রায়পুরা উপজেলা পরিষদ থেকে শুরু হয়ে নরসিংদী-রায়পুরা সড়কের হাসনাবাদ ১০ নম্বর ব্রিজ এলাকায় গিয়ে ফের উপজেলা পরিষদে এসে শেষ হয় এ দৌড়।
এর মধ্যে ৪২ কিলোমিটারের ফুল ম্যারাথনের অংশ নেওয়া দৌড়বিদদের দুইবার এই পথ পাড়ি দিতে হয়েছে আর ২১ কিলোমিটারের হাফ ম্যারাথনে একবার।
আক্তারুজ্জামান বলেন, জেলার ইতিহাসে বৃহৎ এ আয়োজনে দৌড়বিদদের অংশগ্রহণ ছিল স্বতস্ফুর্ত। ম্যারাথনের অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশনে নির্ধারিত সীমা ছিল ৭০০ জনের। তবে হাজারেরও বেশি মানুষ রেজিস্ট্রেশন করতে চেয়েছিলেন।
তবে রেজিস্ট্রেশন করা কয়েকজন নানা কারণে উপস্থিত হতে পারেননি বলে জানান তিনি।
শুক্রবার সরেজমিন উপজেলা পরিষদে মাঠে দেখা গেছে, ম্যারাথনে অংশ নিতে শীতের ভোরে জড়ো হয়েছেন ১৫ বিদেশি নাগরিকসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা দৌড়বিদরা। বিভিন্ন বয়সী ও পেশার দৌড়বিদের উপস্থিতিতে সেখানে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।
আয়োজকরা জানান, ম্যারাথন উপলক্ষে ভোর সাড়ে ৪টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত নরসিংদী-রায়পুরা আঞ্চলিক সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
দৌড়বিদদের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার, গ্রামপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যসহ ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করেন। চিকিৎসা সেবার জন্য ছিল অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম।
আর এ আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার ছিল নরসিংদী প্রেসক্লাব।
অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদ মো. মনির হোসেন বলেন, “শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য দৌড়ের বিকল্প নেই। যুব সমাজকে মাদকসহ সকল অবক্ষয় থেকে বাঁচাতে সবসময় এমন আয়োজন থাকা উচিত।”
ঢাকা থেকে আসা নারী প্রতিযোগী সিদ্দিকা মিলি জানান, “আমি এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সবসময় উৎসুক হয়ে থাকি। দেশের যে প্রান্তেই এমন আয়োজন হয় অংশগ্রহণের চেষ্টা করি, খুবই ভাল লেগেছে।”
এবারের ম্যারাথনে অংশ নেওয়া বিজয়ীরা দেওয়া হয়েছে মেডেল, সনদ ও গাছের চারা। এছাড়া তিন ক্যাটাগরিতে মোট ৯ জনকে দেওয়া হয় বিশেষ পুরস্কার।
এর মধ্যে ফুল ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন পাবনা থেকে আসা দৌড়বিদ ইমরান হাসান।
তিনি বলেন, “এর আগে রায়পুরা হাফ ম্যারাথনে অংশ নিয়ে প্রথম হয়েছিলাম, এবার ফুল ম্যারাথনে প্রথম হয়ে ভাল লাগছে। এমন আয়োজন নিয়মিত হলে খুশি হব। যারা আয়োজনটি করেছে তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
রায়পুরা ম্যারাথন আয়োজক কমিটির সভাপতি মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, “সুন্দর একটি আয়োজনে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজনের চেষ্টা থাকবে।”