বালু উত্তোলনের পর ভারী ট্রাকে করে শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, এতে শহর রক্ষা বাঁধও হুমকির মুখে রয়েছে।
Published : 17 Feb 2025, 12:52 AM
ফরিদপুরের সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের কুমার নদের উৎসমুখ মদনখালী এলাকায় রাতের আধারে অবৈধভাবে বেকু দিয়ে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী স্থানীয় মহল।
সরেজমিনে রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের এম এম ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায় কুমার নদ থেকে একাধিক ভেকু দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অবৈধভাবে বেকু দিয়ে বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী তাই তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে কেউ রাজি হয়
না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বালু উত্তোলনে অনেক ফসলী জমি বিলীন হয়ে গেছে। যারা নদী তীরে বসবাস করছেন এভাবে বালু উত্তোলন করায় তাদের বসবাস ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ধুলায় নদী তীরের বাসিন্দারাও আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগে।
এছাড়া বালু উত্তোলনের পর ভারী ট্রাকে করে শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, এতে শহর রক্ষা বাঁধও হুমকির মুখে রয়েছে।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইরশাত জাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন শেষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে নির্দেশ উপেক্ষা করে যারা বালু উত্তোলন করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
“কোনো ছাড় দেওয়া হবে না, সে যেই হোক”- বলেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন জানান, “অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে, এখনই বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ধসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা ও পুলিশ সুপার আব্দুল জলিলসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা বালু উত্তোলনের স্থানগুলো ও শহর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেন এবং নদী তীরের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যার কথা শুনেন।
তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ঘোষণা করেন। তারা জানান- কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে পারবে না। যদি কেউ দুঃসাহস দেখায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।