“ছাত্রলীগের কারণে দাপ্তরিক কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায় না“, বলেন উপাচার্য।
Published : 18 Jun 2023, 12:04 AM
কিছু দাবিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ছাত্রলীগ।
শনিবার দুপুরে প্রথমে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী উপচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ১২ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সালসহ নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়।
বিক্ষোভের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ফটক, আবাসিক হলের ফটকেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। এতে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও ক্যাম্পাসের ভোগান্তিতে পড়েন।
উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় কোনো সুরাহা না হওয়ায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধের হুমকি দিয়েছেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “দুপুর ১২টার সময় ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী রেজিস্ট্রার দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। তখন আমি কথা বলতে গেলে ছাত্রলীগের সভাপতির সঙ্গে আমার বাগবিতণ্ডা হয়।
“এ ঘটনার ১০-১৫ মিনিট পর তাদের আরও বেশকিছু কর্মীকে নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় ও আমাকে আমার কার্যালয়ে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে আমার কার্যালয়ের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
উপাচার্য আরও বলেন, “ছাত্রলীগের কারণে রেজিস্ট্রার দপ্তর, পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তর, প্রকৌশল দপ্তর, হিসাব দপ্তরসহ বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের কাজ আটকে যায়। তাদের কারণে দাপ্তরিক কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায় না। এর কারণ কী হতে পারে তা আমার থেকে আপনারাই ভালো বুঝবেন।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃতি মামলায় চূড়ান্ত অভিযুক্তদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতিসহ ১২ দফা দাবি উপাচার্যের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। দাবি না মানা হলে ছাত্রলীগ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
ছাত্রলীগের ১২ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষার সুবিধার্থে অনতিবিলম্বে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের লিফট লাগনো, বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে ও ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃত মামলায় অভিযুক্তদের চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, সুষ্ঠু তদন্ত ব্যতীত কোনো শিক্ষার্থীর উপর শাস্তি আরোপ বা সরাসরি বহিষ্কার না করা ও বহিষ্কৃত সব শিক্ষার্থী ওপর আরোপিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার।
বিশ্ববিদ্যায়ের উন্নয়নমূলক কাজের যে দুর্নীতির রিপোর্ট এসেছে সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে, সেমিস্টার ফি কমানো, প্রথমবার রিকেট (অকৃতকার্য) ফি মওকুফ এবং দ্বিতীয় রিটেক (অকৃতকার্য) ফি প্রতি ক্রেডিট বাবদ সর্বোচ্চ ২৫ টাকা নির্ধারণ, বিভাগ উন্নয়নের নামে অবৈধ টাকা নেওয়া বন্ধ, শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে কিউআরকোড সম্পর্কিত খাতা প্রদান ও ইমপ্রুভমেন্ট সিস্টেম চালু করার দাবি জানানো হয়।