নাটোরের নলডাঙ্গার খাজুরায় এ ঘটনা ঘটে।
Published : 24 Apr 2025, 07:49 PM
নাটোরে স্ত্রীর গোপন ভিডিও ধারণ করে ‘ব্লাকমেইল করায়’ ছোট ভাইয়ের দুই হাতের কব্জি কেটে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরার এলাকায় একটি বাড়িতে ডেকে নিয়ে দুই হাতের কব্জি কেটে নেওয়া হয় বলে জানান নলডাঙ্গার থানার ওসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
আহত ইসরাফিল ইসলাম (২২) নাটোরের সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দাহ এলাকার তাইজুল ইসলামের ছেলে। তিনি রাজশাহীতে টাইলস মিস্ত্রির কাজ করেন।
তাইজুল ইসলামের চার ছেলের মধ্যে ইসরাফিল ইসলাম ছোট, মেজ ছেলে ইসমাইল ইসলাম এবং সেজ ছেলে ইব্রাহীম ইসলাম। তাদের বড় ভাই ব্যাংকে কাজ করেন।
এ ঘটনায় বড়ভাই ইসমাইল ইসলামকে আটক করা হয়েছে।
ওসি আসমাউল হক বলেন, “ইসরাফিল ব্লাকমেইল করে বড় ভাইয়ের স্ত্রীর ছবি-টবি নিছে। এই নিয়ে শাসন করতে গিয়ে হাত কেটে ফেলছে। ইসমাইল হাত কেটে নিয়েছে ইসরাফিলের।”
ইসমাইলদের সেজ ভাই ইব্রাহীম ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “ইসরাফিল বুধবার বেড়াতে আসে। আপন ভাবীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মোবাইলে খারাপ ভিডিও ধারণ করাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে।”
এদিকে ইসরাফিলকে নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
নাটোর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা সুব্রত সাংবাদিকদের বলেন, “রোগীর দুই হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন ছিল। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা হয়েছে বলে মনে হয়েছে। সকাল ৭টার দিকে রোগীকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেসময় তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
সিংড়ার হাতিয়ান্দাহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুব উল আলম বলেন, “ওদের ভাইয়ে ভাইয়ে আগে থেকেই পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল। উনারা মূলত পেশায় রাজমিস্ত্রী। ইসরাফিল রাজশাহীতে টাইলসের কাজ করে। কালকে ফোন দিয়ে ওকে ডেকে আনছে। এনে বলছে, তুই আমার বোয়েক (বউ) ফোন দিছুলু কে? তখন সে বলছে, না আমি ফোন দিনি। একপর্যায়ে টকঝক (ঝগড়া) লাগায় দিয়ে। পরে হাত ব্যান্দে, গ্র্যান্ডিং মেশিন দিয়ে কাটি দিছে। ওদের আসল বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, এখানে আসছে ৩০ বছর হল।”
নলডাঙ্গা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “হাতিয়ান্দাহ থেকে কিভাবে খাজুরায় নিয়ে আসছে এখনও বিস্তারিত জানতে পারিনি। একটা বাড়িতে নিয়ে আসছিল, বাড়িতে কেউ নাই, সেটা তাদের কোনো আত্মীয়ের বাড়ি কিনা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। অভিযোগ এলে মামলা হবে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, “এ ঘটনায় আমরা একজনকে রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
“ঘটনাটাও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি আমরা। নলডাঙ্গাতে বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হাত কাটার পরিকল্পনা করেছিল। পরকীয়ার ঘটনা, গোপনে ভিডিও ধারণ বা ব্লাকমেইলিং- সব মিলে পারিবারিক বিরোধের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের প্রাথমিক ধারণা।”