মেয়র প্রার্থী হিসেবে জমা দেওয়া হলফনামায় সাদিক নগদ টাকা দেখিয়েছিলেন ছয় লাখ ৮১ হাজার টাকা। আর এখন আছে দুই কোটি ২২ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৫ টাকা।
Published : 06 Dec 2023, 08:28 PM
গত পাঁচ বছরের মধ্যে বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সদ্য সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বার্ষিক আয় বেড়ে প্রায় আড়াই গুণ হয়েছে; নগদ অর্থ বেড়েছে ৩২ গুণের বেশি।
২০১৮ সালে বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীতার সময় এবং এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জমা দেওয়া সাদিকের হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
তখন জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন আট লাখ ৩১ হাজার ৪০০ টাকা। পাঁচ বছর পর তার বার্ষিক আয় বেড়ে ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকা হয়েছে বলে তিনি এবার জমা দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র বড় ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ দলীয় মনোনয়নে ২০১৮ সালের সেই সিটি নির্বাচনে জয়ী হয়ে মেয়র হয়েছিলেন।
মেয়র প্রার্থী হিসেবে জমা দেওয়া হলফনামায় সাদিক তার কাছে নগদ টাকা দেখিয়েছিলেন ছয় লাখ ৮১ হাজার টাকা। আর এখন তার কাছে নগদ অর্থ রয়েছে দুই কোটি ২২ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৫ টাকা।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দেওয়া হলফনামায় নিজেকে কান্তা করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানির পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করলেও এবার পেশা দেখিয়েছেন মৎস্য চাষ ও রাখি মালের ব্যবসা।
সেসময় হলফনামায় তিনি বছরে আয় দেখিয়েছিলেন বাসা ভাড়া থেকে দুই লাখ ১৬ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে চার লাখ ৯৫ হাজার ৪০০ টাকা, চাকরী থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা।
সেই হিসেবে তার বছরের আয় ছিল আট লাখ ৩১ হাজার ৪০০ টাকা।
এবারের হলফনামায় তিনি বাড়ি ভাড়া থেকে দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা, নিজ পেশা থেকে সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা, মেয়র পদে দায়িত্বকালীন সম্মানী ১০ লাখ ২০ হাজার টাকা, শেয়ার থেকে দুই লাখ টাকা আয় দেখিয়েছেন।
৫ বছরে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর আয় বেড়েছে ৩৭ গুণ
সেই হিসেবে তার বছরে আয় ২২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরে তার বার্ষিক আয় বেড়েছে ১৪ লাখ আট হাজার ৬০০ টাকা।
তখন সম্পদ দেখিয়েছিলেন একটি রিকন্ডিশন মাইক্রোবাস, খাট, আলমিরা, সোফা ও ডাইনিং টেবিল, পূর্বাচলে রাজউকের আবাসিক প্লট এবং গুলশানের নিকেতনে একটি আবাসিক ফ্ল্যাট।
কিন্তু সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তিনি পূর্বাচলে রাজউকের আবাসিক প্লটের তথ্য দেননি। গুলশানের নিকেতনের একটি আবাসিক ফ্ল্যাটের কথা উল্লেখ করেছেন, যার মূল্য দেখিয়েছেন ১০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।
এবারের হলফনামায় নিজের কোনো গাড়ির তথ্যও দেননি সাদিক।
তবে ৮৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকার অকৃষি জমির কথা উল্লেখ করেছেন। যা সিটি নির্বাচনের হলফনামায় ছিল না।
২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে সেরনিয়াবাত সাদিক তার স্ত্রীর নামে কোনো সম্পদের তথ্য দেননি। তবে এবার তার স্ত্রীর ১০ ভরি স্বর্ণ ও ২০ লাখ টাকা মূল্যের ৬৫ শতাংশ অকৃষি জমির তথ্য উল্লেখ করেছেন।
আগের হলফ নামায় কোনো মামলার কথা উল্লেখ না থাকলেও এবারের হলফ নামায় দুইটি ফৌজদারি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তবে এই দুই মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন তিনি।
এ বছরের সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও সাদিক আব্দুল্লাহ নৌকা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু সেখানে দলের মনোনয়ন নিয়ে মেয়র হয়েছেন তার চাচা আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও বরিশাল-৫ সদর আসনে নৌকার মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন সাদিক। দল সেখানে আস্থা রেখেছে বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের ওপর। পরে সাদিক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।