“ঘটনায় অপহৃত শিশুটির স্বজনরা টেকনাফ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও অভিযান শুরু করে।”
Published : 01 May 2024, 11:36 PM
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় অপহরণের দুইদিন পর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাঁচজনকে।
র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের আওতাধীন টেকনাফ ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তানভীর হাসান শিথিল বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
উদ্ধার নয় বছর বয়সী শিশু মো. সাইফ টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকার মোহাম্মদ হোছনের ছেলে। সে স্থানীয় জাদিমুরা রহমানিয়া হোসাইনিয়া মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র।
গ্রেপ্তাররা হল-টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকার নুর আলমের ছেলে মো. সাব্বির (১৭), একই এলাকার ছৈয়দ হোসেনের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (১৬), আবুল কালামের ছেলে আকতার কামাল (২৬), নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-৫ ব্লকের বাসিন্দা আবুল ফয়েজ ওরফে মাঝির ছেলে হাসান বশর (১৯) এবং সাবরাং ইউনিয়নের নাজিরপাড়ার মৃত ঠাণ্ডা মিয়ার ছেলে মো. সেলিম (৪৭)।
রোবববার বিকালে হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া নয়াপাড়া শালবাগান রাস্তার মাথা থেকে শিশু মো. সাইফকে অপহরণ করা হয়। সোমবার বিকালে তার মামা বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তানভীর হাসান শিথিল বলেন, “গত ২৮ এপ্রিল বিকালে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে সাইফকে অপহরণ করা হয়। প্রতিদিনের মতো মাদ্রাসা ছুটি হয়ে রাত হলেও ছেলে বাড়িতে ফিরে না আসায় স্বজনরা তাকে খুঁজতে বের হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও না পেয়ে তারা বাড়িতে ফিরে আসে।
“মঙ্গলবার সকালে একটি মোবাইল ফোন থেকে বাড়িতে কল করে বলা হয়, সাইফকে পেতে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে কলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ ঘটনায় অপহৃত শিশুটির স্বজনরা টেকনাফ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও অভিযান শুরু করে।”
র্যাবের এ কোম্পানি অধিনায়ক বলেন, অভিযানের এক পর্যায়ে মঙ্গলবার বিকালে র্যাব খবর পায়, অপহৃত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ অপহরণকারিরা টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের নাজিরপাড়ায় অবস্থান করছে। পরে সেখানে মো. সেলিমের আস্তানা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় পালিয়ে যাওয়ার সময় ধাওয়া দিয়ে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তানভীর হাসান শিথিল।
এর আগে গত ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২০ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে ৬২ জন স্থানীয় বাসিন্দা; বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের পরিবারের তথ্য বলছে অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৩ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে।
গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তির বরাতে র্যাব জানিয়েছে, মাদ্রাসা থেকে ক্লাশ শেষে ফেরার পথে টাকার লোভ দেখিয়ে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যরা মো. সাইফকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। স্থানীয় ও রোহিঙ্গা ১২/১৫ জনের কম বয়সি কিশোর মিলে একটি কিশোর গ্যাং গড়ে তোলে অপহরণসহ নানা অপরাধ সংঘটিত করে আসছিল।