Published : 04 May 2025, 06:07 PM
জুলাই আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সেবা কার্যক্রম নয় মাস পর শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই পাসপোর্ট সেবা নিতে নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কের পাশে অবস্থিত এ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় বলে নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. জামাল হোসেন জানান।
গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে যায় নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। এ আগুনে পাঁচ হাজারেরও বেশি তৈরি পাসপোর্ট, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও আসবাব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন লুটপাটও করা হয়েছিল।
এরপর থেকে এ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবা প্রদান বন্ধ থাকলেও গত কয়েকমাস নারায়ণগঞ্জ জেলার বাসিন্দাদের তিনভাগে ভাগ করে কেরাণীগঞ্জ, নরসিংদী ও মুন্সীগঞ্জ অফিস থেকে সেবা চালু রাখা হয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এখন নিজ জেলার অফিসেই স্বাভাবিকভাবে সেবা পাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জবাসী।
সংস্কার শেষে নয় মাস পর এ কার্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সকাল থেকেই ছিল সেবা প্রত্যাশীদের ভিড়। পাসপোর্ট অফিসের ভেতর ও বাইরে সেবা প্রত্যাশী নারী-পুরুষের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
সশরীরে আবেদন, বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট ও অন্যান্য কার্যক্রম শুরু হওয়ায় ভোগান্তি থেকে অবসান পেয়েছেন এ অঞ্চলের বাসিন্দারা। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এ কার্যালয়ের বিপরীতে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয় বলে জানান আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা।
পাসপোর্ট নবায়ন করতে আসা সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই অফিসে নবায়ন করতে না পাইরা মুন্সীগঞ্জে গেছিলাম। যাইতে-আসতেই সাত ঘণ্টা চলে যায়। ওইখানে আবার সিন্ডিকেটের হাতেও পড়ছি। পরে আর নবায়ন করি নাই।”
নারায়ণগঞ্জ অফিসের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেন আনোয়ার।
পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা ‘দালালমুক্ত’ সেবা প্রদানের আশ্বাস দেন। সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি না করে সহজ সেবা প্রদানে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জ একটি শিল্পাঞ্চল ও ঘনবসতিপূর্ণ জেলা। এখানকার বহু মানুষ পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যান, বিশেষ করে শ্রমজীবী শ্রেণি। তাই এই অফিস পুনরায় চালু হওয়ায় মানুষের বড় ভোগান্তির অবসান হলো। তবে সেবাপ্রত্যাশীরা যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেবা পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”
“বাংলাদেশি না হয়েও কেউ যদি পাসপোর্ট নেওয়ার চেষ্টা করে বা এমন অভিযোগ আসে, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে”, বলেন জেলা প্রশাসক।
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মো. জামাল হোসেন বলেন, “দীর্ঘ নয় মাস পর পাসপোর্ট কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়েছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া পাসপোর্টগুলোর মধ্যে যেগুলো অক্ষত ছিল, সেগুলো আগারগাঁও থেকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি তার পুরনো পাসপোর্ট না পেয়ে থাকেন, তাহলে নারায়ণগঞ্জ অফিস কিংবা আগারগাঁও অফিসে যোগাযোগ করলে তা সংগ্রহ করতে পারবেন।”