চীনা প্রকৌশলীর মৃত্যু: তৃতীয় দিনেও কারখানা ফটক ছাড়েনি স্বজনরা

পুলিশ জানায়, ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করলে মালিকপক্ষ ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। কিন্তু নিহতের স্বজনরা তাতে রাজি হননি।

নরসিংদী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2023, 02:53 PM
Updated : 13 May 2023, 02:53 PM

নরসিংদীতে চীনা প্রকৌশলীর মৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় দিনের মত কারখানা ফটকে অবস্থান করছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।

নরসিংদীতে চীনা মালিকানাধীন একটি টেক্সটাইল কারখানায় লি রংহুয়া (৫৭) নামে দেশটির এক প্রকৌশলীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে তাদের এ অব্স্থান।

শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লি’র স্বজনদের অবস্থান করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পরিদর্শক নুরুল হুদা।

তিনি বলেন, “শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টা পর্যন্ত আমরা ও কারখানার মালিকসহ সবাই নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি। তারা কারও কথাই শুনছেন না। একেক সময় একেক কথা বলছেন। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে তারা কারখানার ফটকে অবস্থান নেওয়ার পর থেকে কারও সঙ্গে কথা বলছেন না।”

নরসিংদী সদর উপজেলার দক্ষিণ শীলমান্দি এলাকার ফুজিয়ান অনান টেক্সটাইল কোং বিডি লিমিটেডের কার্ডিং সেকশনে গত ৩ মে দিবাগত রাত ১০টা ৪০ মিনিটে লি রংহুয়া নামের ওই চীনা প্রকৌশলী কাজ করার সময় মেশিনের আঘাতে কাটা পড়ে নিহত হন। পুলিশ নিহত লি’র লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরদিন বিকালে লাশ কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

এরপর স্বজনদের অপেক্ষায় লাশ ঢাকার উত্তরার জাহানারা ক্লিনিকের হিমঘরে সংরক্ষণ করে কারাখানা কর্তৃপক্ষ। পরে কারখানার খরচে নিহতের স্ত্রী ঝেং মেইলিং, ভাই লি রংইয়ান, ছেলে লি শিয়াওহুই, মেয়ে লি শি শি ও আইনজীবী কু সু টেং গত ৭ মে বাংলাদেশের আসেন।

গত ৮ মে কারখানার মালিক চেন ঝং হোসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিসিটিভির ফুটেজ দেখেন। পরে নিহতের পরিবার তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। তবে মালিক ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। কিন্তু তা না মেনে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে নিহতের স্ত্রী, ভাই ও মেয়ে কারখানারটি প্রধান ফটকে এসে অবস্থান নেন।

এ বিষয়ে ওসি বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিহত লি রংহুয়ার মেয়ে লি জিজি জানান, কারখানার মালিক চেন ঝং হো সরাসরি সামনে এলে তারা পুলিশ ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসতে আগ্রহী। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কারখানার মালিককে আনা হলে বেঁকে বসেন তারা। তখন তারা দাবি করেন, তাদের আইনজীবী কু সু টেং এলে কথা বলবেন। কিন্তু আইনজীবী সরাসরি না এসে ফোনে কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী পরিবার নিজেদের আইনজীবীর কথাও মানছেন না।”

“তখন তাদের আইনজীবী পুলিশকে জানান, এ বিষয়ে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো জানিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ বলেন, “আমরা দোভাষীর মাধ্যমে নিহতের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তাদের দাবি অনুযায়ী কারখানার মালিককে এনে আলোচনার চেষ্টা করেছি। পরে তাদের আইনজীবীর সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা তাদের আইনজীবীর কথাও মানছেন না। তাই আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে চায়না দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

আরও পড়ুন:

Also Read: নরসিংদীতে চীনা প্রকৌশলীর মৃত্যু, ক্ষতিপূরণ দাবিতে কারখানার ফটকে স্ত্রী-সন্তান