“পুলিশের তৎপরতা অপহরণকারীরা বুঝতে পেরে ছেলেটিকে ঘটনাস্থলে ছেড়ে পালিয়েছে।”
Published : 27 Apr 2025, 10:09 AM
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে পাঁচ বছর পর মা-বাবার কাছে ফিরেছেন সামাউন আলী নামের এক তরুণ; যাকে তার চাচাতো ভাই চাকরি দেওয়ার কথা বলে অপহরণ করেছিল বলে পরিবারের অভিযোগ।
শুক্রবার গভীর রাতে অপহরণকারীরা সামাউনকে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় ছেড়ে যায়। সেখান থেকে পুলিশ ও স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে শনিবার বিকালে সামাউনকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে বালিয়াডাঙ্গী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দিবাকর অধিকারী জানান।
২০ বছর বয়সী সামাউন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের গোগবস্তি গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে।
পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে পাঁচ বছর আগে সামাউনকে নিয়ে যান চাচাতো ভাই জমিরুল ইসলাম ওরফে মিঠুন। কিছুদিন পর তার সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সোবহান মিঠুনের কাছে একাধিকবার ছেলেকে ফেরত চান। মিঠুন সামউনকে ফেরত পাঠানোর কথা বলে কয়েক দফা টাকাও নিয়েছেন সামাউনের বাবার কাছ থেকে। কিন্তু ছেলেকে ফেরত দেননি।
দীর্ঘদিন ধরে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ছেলেকে খোঁজাখুঁজি করে ব্যর্থ হয়ে সাত মাস আগে ঠাকুরগাঁও আদালতে মামলা করেন সোবহান। এতে মিঠুন ও তার বাবা আব্দুল খালেককে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার পুলিশকে সামাউনকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) দিবাকর বলেন, “আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর মামলার তদন্ত শুরু করি। পুলিশের তৎপরতা অপহরণকারীরা বুঝতে পেরে ছেলেটিকে ঘটনাস্থলে ছেড়ে পালিয়েছে।”
সামাউন বলছেন, তাকে নরসিংদী জেলার কোনো এক গুদামে নিয়ে রাখা হয়েছিল। তিনি কাজ করতেন, কিন্তু বেতন তুলে নিতেন অন্য কেউ। কিছুদিন এভাবে চলার পর সবার সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর কোথায় ছিলেন, কী করছিলেন, কিছুই বলতে পারছেন না।
তবে তাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বলে দাবি করেন এ তরুণ।
সামাউনের বাবা সোবহান বলেন, “স্থানীয়ভাবে সালিশ বসিয়ে একাধিকবার ছেলেকে ফেরতে চেয়েছি। কিন্তু মিঠুন ও তার বাবা কোনো কথা শোনেনি। গ্রামবাসীর পরামর্শে মামলা করার পর পুলিশ যখন আসামিদের ধরতে চাইল, তখন তারা ছেলেকে ফেরত দিল। অপহরণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”