“গত ৫ অগাস্টের পর দেশের জনগণের মধ্যে যে প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে; তা হতাশায় পরিণত করা যাবে না।”
Published : 19 Feb 2025, 08:58 PM
নির্বাচনের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
তিনি বলেন, “গত ৫ অগাস্টের পর দেশের জনগণের মধ্যে যে প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে; তা হতাশায় পরিণত করা যাবে না। যদি সংসদ নির্বাচনের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত হয়, তবে বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।”
বুধবার বিকালে সিলেট নগরীর রেজিস্ট্রি মাঠে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে অনুষ্ঠিত সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তারেক রহমানের কঠোর প্রচেষ্টা জনগণ ও সুশীল সমাজের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট আলাল বলেন, “গত ১৭ বছরে দেশে গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার সংকুচিত হয়েছে। জনগণের দুঃসময়ে বিএনপি সবসময় তাদের পাশে থেকেছে; কখনও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, কখনও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, আবার কখনও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে।”
সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে।
“পোল্ট্রি ও সয়াবিন তেলের বাজার সিন্ডিকেটের দখলে রয়েছে, অথচ সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না “
সমাবেশ থেকে একটি রাজনৈতিক দলকে ইঙ্গিত করে আলাল বলেন, “বার বার কূল বদল করা তাদের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। দয়া করে যেকোনো একটি অবস্থান নিন। বিএনপির দোষ ত্রুটি খোঁজার পরিবর্তে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান সুসংহত করুন।”
সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা তিনি বলেন, “দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনগণকে স্বস্তি দিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া নেতাদের ফিরিয়ে দিন এবং গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনুন।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, “সিলেটে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। তারা নির্বাচনী ও রাজনৈতিক লক্ষ্য স্পষ্ট করতে চায়।
“যত দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে, তত দ্রুত জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটির সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, “নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার কি সত্যিই জনগণের সমস্যার সমাধান চায়..? তাদের উচিত জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও গণঅভ্যুত্থানের বার্তা বোঝা।”
বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন। ছাত্র-জনতার আন্দোলন নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, যা রাজনীতি, সমাজ, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ওপর সুদূর-প্রসারী প্রভাব ফেলবে।”
সমাবেশে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী, সহ-ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামিম ও অ্যাডভোকেট হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।
আরও বক্তব্য রাখেন- মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী মাহবুব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাকিল মুর্শেদ, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদিপ জ্যোতি এষ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন দিনার, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান, জেলা মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাহসিন শারমিন তামান্না।