শুক্রবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা বৃহস্পতিবার ছিল ১০ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস।
Published : 03 Jan 2025, 02:11 PM
নওগাঁয় কনকনে শীতে জনজীবনে বাড়ছে ভোগান্তি। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভিড় করছেন রোগীরা।
জেলায় গত চার দিন ধরে কুয়াশা কিছুটা কমলেও দিনের বেলা বইতে থাকা হিমেল হাওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা কমছে না।
শীতের কারণে বাড়ছে ডায়রিয়া আমাশয়, শ্বাসকষ্টসহ বাড়ছে শীতজনিত রোগ। এ কারণে হাসপাতালে নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন আবাসিক চিকিৎসক আনছার আলী।
তিনি জানান, আগে যেখানে দিনে ডায়রিয়া-আমাশয়, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ২০-৩০ জন রোগী হাসপাতালে আসতেন, সেখানে এখন প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন বিভিন্ন বয়সী মানুষ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন নতুন শিশু রোগীসহ বর্তমানে ৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানান এই চিকিৎসক।
তিনি তীব্র শীতের কারণে শিশু ও বয়ঃবৃদ্ধদের গরম কাপড়ে মুড়িয়ে রাখার এবং ঘর থেকে বের না করার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে চরম শীতে কষ্টে পড়েছেন জেলার খেটে খাওয়া দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক ও রিকশা ভ্যান চালকরাও। দিনমজুরদের আয় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
নওগাঁ শহরের রিকশা চালক শরিফুল ইসলাম বলেন, শীতে রিকশা চালানো কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে। কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা কাজ করতে চায় না। এছাড়া শহরে লোকজন কম যাওয়ায় যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না। ইনকাম অর্ধেকে নেমে এসেছে।
বাইপাস সড়কের চা দোকানি তারেক বলেন, প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ কাপ চা বেচতেন তিনি। কিন্তু শীতের দাপটে লোকজন বাইরে আসছেন না। ফলে চা বিক্রি অনেক কমে গেছে।
কনকনে শীতের প্রভাব পড়েছে চলতি মৌসুমের ইরিবোরো চাষাবাদেও। ঠান্ডা ও কুয়াশায় ক্ষতি হচ্ছে ইরি-বোরো বীজতলার।
শহরতলীর বরুনকান্দির কৃষক ফিরোজ আহমেদ বলেন, “ঠান্ডার কারণে কৃষি শ্রমিকরা মাঠে কাজ করতে পারছেন না। এর ফলে ইরি বোরো চাষাবাদ কিছুটা বিলম্বিত হয়ে পড়ছে।”
নওগাঁ বদলগাছী আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় জেলার তাপমাত্রা নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। দিন-রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।
তিনি জানান, শুক্রবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা বৃহস্পতিবার ছিল ১০ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস।
হিমেল বাতাসের কারণে আগামী দুয়েকদিন তাপমাত্রা আরও কিছুটা নিচে নামতে পারে বলেও জানান তিনি।