“আকস্মিক প্লাবিত হয়ে সাত শতাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।”
Published : 02 Jul 2024, 08:29 PM
টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে শেরপুরের চেল্লাখালী, মহারশি, সোমেশ্বরী ও ভোগাই নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান জানান, নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর পানি মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার এবং চেল্লাখালি নদীর পানি ৩৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীতে পানি পরিমাপক মিটার গেজ না থাকায় তা বিপৎসীমার কত সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তা বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, “উজানের ঢলের পানির প্রবল চাপে ঝিনাইগাতীর খইলকুড়া এলাকায় এবং নালিতাবাড়ীর সন্ন্যাসীর ভিটা এলাকায় নদীর তীরবর্তী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙেছে।”
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, দুই দিনে শেরপুর জেলায় ৫৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এ দিকে ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর পানি দু-কুল উপচে প্রবাহিত হওয়ায় ঝিনাইগাতী বাজার ও আশপাশের এলাকা আকস্মিকভাবে প্লাবিত হয়েছে।
নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে। অনেক স্থানে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সেই সঙ্গে নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকায় সবজি ও ধানের বীজতলা পানির নিচে ডুবে গেছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা কলসপাড়, মরিচপুরান, যোগানিয়া ইউনিয়ন এবং নালিতাবাড়ী পৌরসভার পাঁচটি গ্রাম হাঁটু পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
ঝিনাইগাতীর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন বলেন, মহারশি নদীর পানি দু-কুল উপচে প্রবাহিত হওয়ায় ঝিনাইগাতী বাজার ও নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকার বাড়িঘরে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে।
“অনেক স্থানে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সেই সঙ্গে নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকায় সবজি ও ধানের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে।”
একই কথা জানালেন খইলকুড়া এলাকার বাসিন্দা নাসিমা বেগম ও নুরুল ইসলাম।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে ঝিনাইগাতী বাজার ও নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
“আকস্মিকভাবে প্লাবিত হওয়ায় সাত শতাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে এখনও কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।”
তবে বন্যার পানি খুব দ্রুতই নেমে যাবে বলে আশা করছেন ইউএনও।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বলেন, উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের এবং পৌরসভার একাংশের পাঁচটি গ্রাম হাঁটু পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
“পানি খুব দ্রুতই নেমে যাবে। এ ছাড়া আমরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সব সময় প্রস্তুত আছি।”