যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়; যা অনাদায়ে তাদের আরও এক বছর সাজা খাটতে হবে।
Published : 20 Jun 2023, 08:51 PM
সিরাজগঞ্জে দুটি হত্যা মামলায় তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
এর মধ্যে সদর উপজেলার ব্রাহ্মণগাতি গ্রামের শিউলি খাতুনকে হত্যার দায়ে তার সৎ ভাই মাসুদ ও প্রেমিক সাদ্দাম হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির।
আর সৎ ছেলে শাহাদৎকে হত্যার অভিযোগে বেলকুচি উপজেলার মনিরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এরফান উল্লাহ।
জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এরফান উল্লাহ মঙ্গলবার পৃথক আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুর রহমান জানান।
পিপি আব্দুর রহমান জানান, তিন আসামির মধ্যে সাদ্দাম ও মাসুদ পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ব্রাহ্মণগাতি গ্রামের হাসান তালুকদারের প্রথম পক্ষের সন্তান মাসুদ। তাকে লালনপালন না করায় বাবার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন মাসুদ।
অন্যদিকে হাসান তার দ্বিতীয় পক্ষের মেয়ে শিউলি খাতুনকে প্রেমিক সাদ্দামের সঙ্গে বিয়ে না দিয়ে অন্যত্র বিয়ে দেয়। তাতে হাসানের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ওই গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে সাদ্দাম ।
২০১০ সালের ২০ নভেম্বর শিউলি তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেলে সাদ্দাম ও মাসুদ কৌশলে তাকে ডেকে নিয়ে পাশের রাজিবপুর বিলের মধ্যে গলাকেটে হত্যা করেন। এ ঘটনায় সাদ্দাম ও মাসুদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন হাসান।
আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচার শেষে তাদের দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
অন্য মামলার বিবরণে বলা হয়, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি গ্রামের শাহিদা খাতুন তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর একই উপজেলার গোপালপুর গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে মনিরুল ইসলামকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই শাহিদার প্রথম পক্ষের ৭ বছর বয়সী ছেলে শাহাদৎ তার মায়ের সঙ্গে থাকত। এতে মনিরুলের চক্ষুশূলে পরিণত হয় শাহাদৎ।
এক পর্যায়ে ২০১৯ সালের ১৯ মে মনিরুল মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে শাহাদৎকে বাড়ি থেকে নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। ছয়দিন পর পার্শ্ববর্তী শাহজাদপুর উপজেলার করতোয়া নদীর চরে অর্ধগলিত অবস্থায় শাহাদৎয়ের মরদেহ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় শাহিদা খাতুন তার স্বামী মনিরুলকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে মনিরুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়; যা অনাদায়ে তাকে আরও এক বছর সাজা খাটতে হবে বলে জানান পিপি আব্দুর রহমান।