“বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া যে নির্বাচন করা সম্ভব নয়, সে কথাই আমরা বলেছি,” বলেছেন বিএনপি মহাসচিব।
Published : 04 Jul 2023, 06:42 PM
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে এক ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার মধ্যে তা নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফখরুল।
মঙ্গলবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। বিকাল ৩টায় রাষ্ট্রদূতের পতাকাবাহী গাড়ি কার্যালয়ে ঢোকে।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপ রাষ্ট্রদূত বার্ন্ড স্পেনিয়ার ও ফার্স্ট সেক্রেটারি সেবাস্তিয়ান রিগার ব্রাউন। বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান।
এক ঘণ্টা বৈঠকের পর রাষ্ট্রদূতকে বিদায় দিয়ে কার্যালয়ের ফটকে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “আপনারা নিশ্চয় জানেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এদেশে একটা এক্সপার্ট টিম আসবে আগামী সপ্তাহে এবং এই এক্সপার্ট টিমের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর কথা হবে, আলোচনা হবে, সিভিল সোসাইটির কথা হবে। এই টিমের অ্যাডভান্সার আলোচনার ব্যাপারেই আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
‘‘আপনারা যেটা আঁচ করছেন যে, নির্বাচন… সেটার ব্যাপারেই আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আমাদের কী চিন্তা, আমরা কী ভাবছি, আমরা কী করছি- এই বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে।”
বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনীতিকদের তৎপরতা বরাবরের মতোই বেড়েছে। তা নিয়ে আবার প্রধান দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যও চলছে।
ফখরুল বলেন, “তারা (ইইউ) যেটা সবসময় চাচ্ছেন, অনেকবারই বলেছেন যে- তারা বাংলাদেশের একটা অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়… এটা একইভাবে তারা আজকে ওইটা আরও এক্সপ্লোর করার জন্য আগামীতে তাদের একটা টিম আসবে…
“বাংলাদেশে আসলেও কোনো সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করার সুযোগ আছে কি না-এটা দেখার জন্যে তারা আসবেন এবং ওই টিমটার বিষয়ে আলোচনা করবার জন্য এখানে যে দূতাবাস আছে, সেই দূতাবাসের অ্যাম্বাসেডর এসছিলেন।”
আপনারা কী বলেছেন- এ প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা পরিষ্কার করে যেটা বলেছি যে, বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি এখানে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন করা সম্ভব নয়।”
বিএনপি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার চাইলেও সেই দাবি মানতে নারাজ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দুই পক্ষের অনড় অবস্থানের প্রেক্ষাপটে সমঝোতার জন্য সংলাপ আয়োজনের কথাও উঠছে।
আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যস্থতায় সংলাপের সম্ভাবনা আছে কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে ফখরুল বলেন, “আমি এই বিষয়ে এখনই কোনো কথা বলতে পারব না। সেই ধরনের কোনো আলোচনা আজকে হয়নি।
‘‘আলোচনাটা হয়েছে যে- বর্তমানে বাংলাদেশে নির্বাচনের পরিস্থিতি আছে কি না; এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব কি সম্ভব নয়- সেটাই তারা জানতে চেয়েছে।”
রাজনীতিতে বারবার ‘নির্বাচনকালীন প্রেসক্রিপশনের’ কথা আসছে; তো ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো পরামর্শ আছে কি না-এমন প্রশ্নের উত্তরে ফখরুল বলেন, “প্রেসক্রিপশনের তো প্রশ্নই উঠতে পারে না, কীসের প্রেসক্রিপশন? এখানে নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠুভাবে, এখানে সুষ্ঠু,অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়- নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া।
“বর্তমানে আওয়ামী লীগ যে অবস্থাটা তৈরি করেছে- এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে গত দুইটা নির্বাচনে যে নির্দলীয় সরকার ছাড়া এখানে নির্বাচন সম্ভব না। প্রেসক্রিপশনের প্রশ্ন না, এখানে সংবিধানে আছে, ভোটাররা ভোট দেবে, ভোট দিয়ে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনে সরকার গঠন হবে।”