বুয়েটে ফের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমানরা

এদিন ছাত্রলীগের এই কর্মসূচি নিয়ে কোনো প্রতিবাদ কিংবা প্রতিক্রিয়া বুয়েট শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে আসেনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2022, 02:11 PM
Updated : 15 August 2022, 02:11 PM

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) কর্মসূচি পালন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে আবারও সেখানে কর্মসূচি পালন করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীরা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার দুপুরে বুয়েটের শহীদ মিনারের পাশে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় তারা স্লোগান তোলেন ‘শিবিরের আস্তানা, এই বুয়েটে হবে না, ‘শিবিরের বিরুদ্ধে, লড়াই হবে একসাথে’ ইত্যাদি।

তবে এদিন ছাত্রলীগের এই কর্মসূচি নিয়ে কোনো প্রতিবাদ কিংবা প্রতিক্রিয়া বুয়েট শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে আসেনি।

Also Read: বুয়েটে ছাত্রলীগের ব্যানারে কর্মসূচি সাবেকদের, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাতে বুয়েটে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর হামলায় দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ নিহত হলে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে বুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে এরপর কোনো ছাত্র সংগঠনের তৎপরতা সেখানে নেই।

জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে গত শনিবার সন্ধ্যায় বুয়েটের সেমিনার অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বুয়েট এর সাবেক নেতৃবৃন্দ’ ব্যানারে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এ খবরে বুয়েটের কয়েকশ শিক্ষার্থী মিলনায়তনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে তড়িঘড়ি করে কর্মসূচি শেষ করে ক্যাম্পাস ছাড়েন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।

তবে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা ক্ষোভ জানিয়ে আসছিলেন।

বিক্ষোভকারীদের ‘জঙ্গি’ আখ্যায়িত করে বুয়েটে পুনরায় ছাত্র রাজনীতি চালুর দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।

ওই ঘটনার পর বুয়েটের বেশ কিছু দেয়ালে ‘সনি ও দ্বীপ হত্যার বিচার চাই, করতে হবে’, ‘সনি ও দ্বীপ হত্যায় প্রশাসন নিরব কেন? জবাব চাই, জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান লেখা হয়।

Also Read: বুয়েটে বিক্ষোভ ‘শোক দিবস বিরোধী’ নয়, দাবি শিক্ষার্থীদের

শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিব আহমেদ মুরাদ বলেন, “জামায়াত-শিবির ও মৌলবাদী গোষ্ঠী এখানে আস্তানা গড়ে তুলেছে। আমরা থাকতে এই আস্তানা ফুলে-ফলে গড়ে উঠতে দেব না।”

আগের কর্মসূচি পালনে বাধা পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, “গত ১৩ তারিখ আমাদের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে, তা খুবই হতাশাজনক। তারা কখনও সাধারণ শিক্ষার্থী নয়৷ তারা সাধারণ শিক্ষার্থী সেজে বুয়েটকে ধ্বংসের দিকে ঠেল দিতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে মৌলবাদী গোষ্ঠীর কর্ম নিয়ে সচেতন হয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানাচ্ছি।”

বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক আরেক সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, “আমরা বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী। একইসাথে ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী। যার জন্ম না হলে এইদেশ আমরা পেতাম না তার শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা যে কোনো ধরনের প্রোগ্রাম যে কোনো জায়গায় করার অধিকার আছে।

“কেউ যদি বাধা দেয় তাহলে আমাদের বুঝে নিতে হবে, তারা জামায়াত-শিবির ছাড়া কেউ নয়। যারা বাংলাদেশ চায় না, এইদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায় তারাই বাংলাদেশকে অস্বীকার করে, জাতির পিতাকে অস্বীকার করে। আমরা যখন প্রোগ্রাম করি তখন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে মাঠে নামানো হয়।”

বুয়েটে এই কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাহসান আহমেদ, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাইফ বাবু, সৈয়দ আরিফ মাজহারুল ইসলাম শামীম, সাংগাঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন, মুজাহিদুল ইসলাম সোহাগ, ধর্ম সম্পাদক তুহিন রেজা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা শাহেদ খান, আরিফ হোসেন রিফাত, ফয়সাল মাহমুদ,ফারহানা, রাহীম সরকারসহ প্রায় অর্ধশত কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন।