বুয়েটে বিক্ষোভ ‘শোক দিবস বিরোধী’ নয়, দাবি শিক্ষার্থীদের

রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ায় কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা চাওয়া ছিল মূল উদ্দেশ্য, সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2022, 02:34 PM
Updated : 14 August 2022, 02:34 PM

জাতীয় শোক দিবসের বিরোধীতা নয়, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির পুনরুত্থানের আশঙ্কায় ‘ছাত্রলীগের ব্যানারে কর্মসূচির’ প্রতিবাদ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।

রোববার দুপুরে বুয়েট ক্যাফেটারিয়ারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরে।

তাদের প্রতিবাদকে 'ভিন্ন খাতে' প্রবাহিত করতে 'অপপ্রচার' করা হচ্ছে দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে অপপ্রচার তাদেরকে ভীত ও ব্যথিত করেছে। শনিবারের কর্মসূচি কোনোভাবেই শোক দিবসের অনুষ্ঠান বিরোধী ছিল না।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় বুয়েটের সেমিনার অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বুয়েট এর সাবেক নেতৃবৃন্দ’ ব্যানারে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটির সাবেক নেতারা।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বুয়েটের কয়েকশ শিক্ষার্থী মিলনায়তনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। পরে তড়িঘড়ি করে কর্মসূচি শেষ করে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন সাবেক নেতারা।

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিক্ষোভকারীদের 'জঙ্গি' আখ্যায়িত করে বুয়েটে পুনরায় ছাত্র রাজনীতি চালুর দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে 'উজ্জীবিত' দাবি করে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, সেমিনার কক্ষের অনুষ্ঠান যথারীতি সমাপ্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সেখানে কোনোরূপ বাধা দেয়নি। বিক্ষোভের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ব্যবহার করার অনুমতি প্রদান করায় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জবাবদিহিতা আদায় করা।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, “অতীতে বুয়েটের একাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বিরাজমান রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির বলি হয়েছে, যাদের সর্বশেষ ছিল আবরার ফাহাদ। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির কালো থাবায় নিরাপদ ক্যাম্পাস যেন আবারও ত্রাসের রাজত্বে পরিণত না হয়, সেই আশঙ্কা থেকে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়েছিল।"

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সোমবার ১৫ অগাস্ট বিকাল ৫টায় বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে একটি স্মরণসভা হবে।

এছাড়া উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদনে বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া-মাহফিল আয়োজনের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

২০১৯ সালের গত ৭ অক্টোবর রাতে বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে ১১ অক্টোবর বুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়।