দেশে ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরাতে’ সমমনাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এ বিএনপি নেতা।
Published : 06 Jan 2023, 08:48 PM
যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে ‘সরকারকে বিদায় করে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরাতে’ জনগণ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
শুক্রবার বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির দশম কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমরা মুক্তিযুদ্ধে করেছিলাম একটা গণতন্ত্রের জন্য। সেই গণতন্ত্র আজকে বিলিন হয়ে গেছে। গণতন্ত্র বলে কিছু নাই।
“এখন তো একজনতন্ত্র । উনি যা ইচ্ছা করেন, সেটাই রাষ্ট্রের ইচ্ছা, উনি যা ইচ্ছা করেন সেটাই হয়। তাছাড়া আর কারো ইচ্ছা দেশে চলে না।”
গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরাতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এ বিএনপি নেতা বলেন, “আমরা আজকে একত্রিত হয়েছি যুগপৎ আন্দোলন করছি এই একজনের ইচ্ছাকে ভেঙে বহুজনের ইচ্ছার দাম দেওয়ার জন্য। এই অবস্থার মধ্যে জনগণ আর থাকতে চায় না।
“আমরা ১০টি বিভাগীয় সমাবেশ করেছি। বাধা-বিপত্তি পার হয়ে চিড়া-গুড় নিয়ে একদিনের মিটিং তিন দিনে করেছি। নদী সাঁতরে মানুষ মিটিংয়ে এসেছে। তার অর্থ জনগণ এই সরকারকে আর চায় না।”
আগামী ১১ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারাদেশে গণঅবস্থান কর্মসূচির কথা তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য টুকু বলেন, “আমাদের ঐক্যের মাধ্যমে দেশে যে আন্দোলন হবে, তাতে এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। সেটা কিন্তু বেশি দূরে না। আমাদের অবস্থান প্রতিবাদ হবে ঐতিহাসিক।
“আমি এই কংগ্রেসকে আহবান করছি যে, জনগণ যেন আমাদের যুগপৎ কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে এই সরকারকে বুঝিয়ে দেয় যে, তাদের সাথে মানুষ নেই। আমি মনে করি, জনগণ জেগে উঠেছে। অবশ্যই এই সরকারকে যেতে হবে। জনগণের কাছে কেউ টিকতে পারেনি, তারাও পারবে না।”
শুক্রবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে দলীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির দশম কংগ্রেস। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী জাতীয় ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক দলীয় পতাকা উত্তোলন করে কংগ্রেসের উদ্বোধন করেন। চারদিনব্যাপী এ কংগ্রেস শেষ হবে ৯ জানুয়ারি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অনুষ্ঠান মঞ্চ ভেঙে পড়ার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি নেতা টুকু বলেন, “আজকে আমি একটু অবাক হলাম যে, মঞ্চ বানাতেও লুটপাট হয় এই দলে (আওয়ামী লীগ)। সেটা আবার মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই দলের সাধারণ সম্পাদক পড়ে যান। কারণ তো ওখানেও চুরি হয়েছে। ঠিক মত মঞ্চ তৈরি হয় নাই।
“এখন ওদের ছাত্র সংগঠনের মধ্যেও… যদিও ওদের ছাত্র সংগঠনের একজন জেলা নেতার কাছে ২ হাজার কোটি টাকা পাওয়া যায়। এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে লুটপাট হয় না এবং সেই লুটের টাকা আবার বিদেশে পাচার হয়ে যায়।”
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব আকবর খান, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মাক্সবাদী-লেলিনবাদী লিবারেশন) পলিট ব্যুরোর সদস্য কার্তিক পাল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার বক্তব্য দেন।