বিএনপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় সংঘর্ষ

সরকারের পদত্যাগ ও গ্রেপ্তার-হয়রানির প্রতিবাদে এই কর্মসূচি ছিল বিএনপির।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2023, 12:18 PM
Updated : 23 May 2023, 12:18 PM

পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালের এই সংঘর্ষে পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এসময় একটি বিআরটিসির দোতলা বাস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগও হয়।

সংঘর্ষের জন্য বিএনপি ও পুলিশ পরস্পরকে দায়ী করেছে। বিএনপি বলছে, কর্মসূচি শেষে দলীয় কর্মীরা ফেরার সময় পুলিশ বিনা উসকানিতে তাদের উপর হামলা চালায়। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, বিএনপিকর্মীরা হঠাৎ তাদের উপর হামলা চালায়।

গ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধ এবং সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে মঙ্গলবার মহানগরগুলোতে বিএনপির পদযাত্রার কর্মসূচি ছিল।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে পদযাত্রা হয় ধানমণ্ডিতে। শঙ্করের কাছে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে বিকাল ৪টায় পদযাত্রা শুরু হয়ে তা শেষ হয় সায়েন্স ল্যাবরেটরির কাছে ল্যাব এইড হাসপাতালের সামনে গিয়ে।

কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরপরই সায়েন্স ল্যাবরেটরির কাছে বিএনপিকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

এমরান সরকার নামে এক বিএনপিকর্মী বলেন, “পদযাত্রা শেষে নেতারা চলে যাওয়ার পর আমরা যখন ফিরছিলাম মিছিল করে। তখন পুলিশ বাধা দেয়। সেখানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই সময়ে বিআরটিসি বাসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ এই সময়ে কয়েক রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।”

ক্ষতিগ্রস্ত বিআরটিসি দোতলা বাসটি নগর পরিবহনের ব্যানারের ঘাটারচর থেকে কদমতলী পর্যন্ত চলাচল করত।

ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে পুলিশ ধানমণ্ডি থানা বিএনপির নেতা, গত নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থী শেখ রবিউল ইসলাম রবিসহ কয়েকজনকে পুলিশ আটক করে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের এই কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পদযাত্রা ল্যাব এইডের কাছে শেষ করে নেতা-কর্মীদেরকে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যেতে বলি। আমরাও চলে আসি। এরপরই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

“আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অনেকে আহত হয়েছে পুলিশের হামলায়। আমরা এহেন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে শেখ রবিউল ইসলাম রবিসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি করছি।”

এদিকে ডিএমপির রমনা জোনের উপকমিশনার মো. আশরাফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশের উপর বিএনপির একদল নেতা-কর্মী হঠাৎ হামলা চালায় এবং যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়। ওদের এই হামলায় ৮/৯ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। ফলে আমাদেরকে অ্যাকশনে যেতে হয়।”

ঘটনাস্থল থেকে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সালাম বলেন, “বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে আমরা যখন বেলা আড়াইটায় পদযাত্রা শুরু করব, তখনই সেখান থেকে আমাদের দুই নেতাকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। আমরা কোনো সমাবেশ না করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে সমাবেশ শুরু করে দিই।”

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আবদুস সালাম বক্তব্য রাখেন।

এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের সামনে সমবেত হয়। সেখানে তখন বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।

পদযাত্রা ও পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার কারণে সাত মসজিদ সড়ক ও মিরপুর সড়কে দুপুরের পর থেকে ব্যাপক যানজট ছিল।