“নির্বাচনে ঘুষ দেয়ার জন্য ডিসি-ইউএনওদের জন্য ৩৬৫ কোটি টাকার গাড়ি কেনা হচ্ছে। তাদেরকে টাকা দেয়া হচ্ছে আলাদা করে। শোনা যাচ্ছে ইতিমধ্যে ডিসি-এসপি যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন তাদের কাছে টাকা পৌঁছে গেছে,” বলেন ফখরুল।
Published : 20 Oct 2023, 04:27 PM
সরকারের বিদায়ে ‘আর মাত্র কয়েকটা দিন’ বাকি আছে জানিয়ে নেতাকর্মীদের বুকে সাহস নিয়ে রাস্তায় নামার ডাক দিয়েছেন বিএনপির মহাসচবি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সেমিনারে তিনি বলেন, “আমি এই কথাটা বলতে চাই, আজকে সকলকে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে হবে… এই কথায় যদি আমরা সবাই বিশ্বাস করি তাহলে আসুন আগামী দিনগুলোতে, যে কয়েকটা দিন আছে, এখন কিন্তু মাসও নাই…. কয়েকটা দিন আছে, সেই দিনগুলোতে বুকের মধ্যে সাহস নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।”
আন্দোলনের সফলতার বিষয়ে আশার কথা শুনিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “কথা একটাই আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামি।”
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী দল সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন ‘সোনালী দল’ এর উদ্যোগে ‘কৃষি উপকরণ ও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি-কৃষক এবং নাভিশ্বাস’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সভাপতি গোলাম হাফিজ কেনেডী।
মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটা বানিয়েছে … এটার কোনো কিছু ঠিক নেই একেবারে। তারাও বলেছে, যদি পরিবেশ অনকুল হয় …. তার মানে পরিবেশ অনকূল নয়। এখনও পরিবেশ অনকূল হয়নি। তাহলে দরকারটা কি? পদত্যাগ করেন….আসেন আমাদের সঙ্গে।”
নির্বাচন সামনে রেখে প্রমাসনের কর্মকর্তাদের টাকা দেওয়া বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ ডিম কিনতে পারছে না, লাউ কিনতে পারছে না, শাকসবজী কিনতে পারছে না।
“কিন্তু নির্বাচনে ঘুষ দেয়ার জন্য ডিসি-ইউএনওদের জন্য ৩৬৫ কোটি টাকার গাড়ি কেনা হচ্ছে। তাদেরকে টাকা দেয়া হচ্ছে আলাদা করে। শোনা যাচ্ছে ইতিমধ্যে ডিসি-এসপি যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন তাদের কাছে টাকা পৌঁছে গেছে।”
ফখরুল বলেন, “ভোট দেয়ার অধিকার চলে গেছে, বিচার পাওয়ার অধিকারও আমার নাই। সবাই জড়িত হয়ে গেছে.. এই যে প্রক্রিয়া, লুটপাট দুর্নীতি… সরকার দেশে মগের মল্লুক তৈরি করেছে। সেই মগের মুল্লুক থেকেও এরা বের হতে চায় না।”
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “এখন নতুন সুর শুরু করেছেন। কালকে উনি বলেছেন, বিএনপি সন্ত্রাসী দল। বিএনপি সন্ত্রাসী দল হলে আপনারা কি সন্ত্রাসের বাবা? আপনারা এই রাষ্ট্রটাকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে পুরোপুরি সন্ত্রাসের রাজত্ব বানিয়ে আপনারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছেন।”
সরকারের জবাবদিহিতা নেই বলেই পণ্যের দাম বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “আজকে যে খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে এটা নজিরবিহীন। এটার মূল কারণ হচ্ছে জবাবদিহি বিহীন সরকার। যাকে কোথাও কোনো জবাবদিহি করতে হয় না; ইচ্ছা মতো যা খুশি তাই করতে পারছে।
“তাদের এই ব্যর্থ পরিচালনা, তাদের দুঃশাসন, দুর্নীতি এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে যে, যেখানে মানুষের নাভিশ্বাস বলছেন তো, নাভিশ্বাসও নেই এখন। এখন মৃত্যুবরণ করার অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। আমরা যখন বাজার যাই তখন টের পাই কি ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হই।”
সংগঠনের সভাপতি গোলাম হাফিজ কেনেডীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় আলোচনা অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিনসহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কৃষিবিদরা।